ইভিএম: রাজনৈতিক দলের ‘মতামত’ যেভাবে বদলে দিলো ইসি

নির্বাচন কমিশনের লোগো। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপকালে ১৭টি রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসি। তবে, দ্য ডেইলি স্টারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সেই ১৭টির মধ্যে অন্তত ৪টি রাজনৈতিক দলই ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছে।

দলগুলো হলো— জাকের পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ।

আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দেওয়া রাজনৈতিক দলের তালিকা নিজেদের দলের নাম দেখে অবাক হয়েছেন এ ৪ দলের নেতারা।

তারা বলছেন, ইভিএম বিষয়ে তাদের অবস্থান নিয়ে ইসির বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণই নেই।

শর্তসাপেক্ষে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। তবে, সেই শর্ত পূরণ না করলেও ইভিএমের পক্ষে মত দেওয়া দলের তালিকায় তাদের নামও যোগ করেছে ইসি।

ইভিএমে ভোটার ভেরিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপিএটি) যুক্ত করার সুপারিশ করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এমএ মতিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগামী নির্বাচনে আমরা ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে না এবং ইসির সঙ্গে আলোচনার সময় বিষয়টি স্পষ্ট করে আমরা তাদের জানিয়েছি।'

'আমরা আমাদের ৯ দফা প্রস্তাব কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। সেখানে আমরা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি যে, আমরা আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে। আমরা এ প্রস্তাব গোপনে দেইনি। সুতরাং লিখিত প্রস্তাব দেওয়া সত্ত্বেও ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দেওয়া দলের তালিকায় আমাদের নাম যোগ করা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য', যোগ করেন তিনি।

জাকের পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শামীম হায়দার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ইভিএমের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো কথা বলিনি। আমরা ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলেছি।'

'ব্লকচেইন হ্যাক করা সম্ভব নয়। আমরা ই-ভোটিংয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে যে তালিকা রয়েছে, তাতে আমাদের নাম রাখার কোনো সুযোগ নেই', বলেন তিনি।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের প্রচার বিষয়ক সম্পাদক আজিজুর রহমান হেলাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইসির সঙ্গে সংলাপে আমরা ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে মত দিয়েছি। কিন্তু, ইভিএমের পক্ষে মত দেওয়া দলের তালিকায় কেন আমাদের নাম দেওয়া হলো, তা জানি না।'

গত বুধবার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে ইসি। যেহেতু তারা ইতোমধ্যে ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই সেই কর্মপরিকল্পনায় ইভিএম ব্যবহারে রাজনৈতিক দলগুলোর একমত হওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

সেখানে তারা উল্লেখ করেছে, ২৯টি দল আলোচনায় অংশ নিয়েছে এবং তাদের মধ্যে ১২টি দল স্পষ্টভাবে ইভিএমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং ১৭টি দলের অবস্থান ইভিএমের পক্ষে।

ইসির ওপর আস্থা নেই জানিয়ে বিএনপিসহ ৯টি দল আলোচনায় অংশ নেয়নি। সেই দলগুলোর দাবি, প্রতিটি সরকারই ইসিকে প্রভাবিত করে এবং ইসি কেবল কাগজে-কলমে স্বাধীন।

Comments

The Daily Star  | English

Disrupting office work: Govt employees can be punished within 8 days

The interim government has moved to amend the Government Service Act-2018 to allow swift disciplinary action against its employees who will be found guilty of disrupting official activities.

6h ago