সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের যেসব স্থানে ঈদের নামাজ আদায়

বরিশাল নগরের আহাম্মেদ মোল্লা সড়ক জাহাঁগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া জামে মসজিদে পবিত্র ঈদ-উল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: টিটু দাস/স্টার

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুর, ফেনী, বরিশাল, মৌলভীবাজার ও  লালমনিরহাটের কয়েকটি স্থানে নামাজ আদায় হয়েছে।

আজ শুক্রবার ফেনীতে ৩টি স্থানে সৌদি আববের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর  উদযাপন চলছে।

ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদ নগর ইউনিয়নের পূর্ব সুলতানপুর ৭নং ওয়ার্ডে পৃথক ২টি পাড়ায় ও পরশুরাম পৌরসভার কোলাপাড়া ছয়ঘরিয়া এলাকায় সকালে ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে।

ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদ নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, 'এই ইউনিয়নের পূর্ব সুলতানপুর ৭নং ওয়ার্ডে পৃথক দুটি পাড়ায় সৌদি আববের সঙ্গে মিল রেখে অনেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছে। তাদের মধ্যে একটি অংশ পূর্ব সুলতানপুর শাহ আমানিয়া জাহাগিরিয়া দরবার শরীফে মাওলানা মোহাম্মদ গোলাম নবীর নেতৃত্বে আয়োজিত জামায়াতে অনুষ্ঠিত ঈদের নামাজ আদায় করেন।'

পরশুরাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার কোলাপাড়া ছয়ঘরিয়া এলাকায় গত কয়েক বছর থেকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর মীর হোসেনের নেতৃত্বে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এলাকার কিছু মানুষ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।

অন্যদিকে, শুক্রবার সকালে ঈদ উল ফিতরের নামাজ পড়েছেন মৌলভীবাজারের শতাধিক পরিবারের মুসল্লি। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণে মোনাজাত করা হয়।

আজ সকাল ৭টায় মৌলভীবাজার শহরের সার্কিট হাউস এলাকার আহমেদ শাবিস্তা নামের একটি বাসায় এ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

নামাজে স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নারী ও পুরুষরা অংশ নেন। নামাজে ইমামতি করেন আব্দুল মাওফিক চৌধুরী (পীর সাহেব, উজান্ডি)। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির উদ্দেশে মোনাজাত করা হয়। নামাজ শেষে একজন আরেকজনের সঙ্গে কোলাকুলি করে সৌহার্দ্য বিনিময় করেন।

ইমাম আব্দুল মাওফিক চৌধুরী বলেন, 'আমরা শুধু সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে নয়, বিশ্ব মুসলমানদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছি। ইজমার ভিত্তিতে আজ শাওয়াল মাসের এক তারিখ। ঈদ এক তারিখেই করতে হবে।'

গোপালগঞ্জ থেকে আসা সাজেদুর রহমান বলেন, 'আমি ২০১৪ সাল থেকে এভাবে রোজা ও ঈদ উদযাপন করে আসছি।'

উল্লেখ্য, গত দেড় যুগ ধরে মৌলভীবাজার সার্কিট হাউস এলাকায় সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে বরিশালের তাজকাঠী, জিয়াসড়ক, টিয়াখালী, হরিনাফুলিয়া, বরিশাল সদরের সাহেবেরহাট এলাকাসহ জেলার প্রায় অর্ধশত মসজিদে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের প্রায় অর্ধশত গ্রামে ঈদুল ফিতরের নামাজ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টায় সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরপরই চাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গতকাল রাত সাড়ে ১০টা থেকে বিভিন্ন এলাকায় এ বিষয়ে মাইকিং ও প্রচারণা শুরুর পাশাপাশি ঈদের নামাজের সময়সূচি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার টোরা মুন্সিরহাট জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার সকালে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ৩টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের নামাজ। এসব ইউনিয়নের প্রায় চার শতাধিক পরিবারের লোকজন ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।

সকাল ৯টার দিকে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা ইমান আলী।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতি বছরের মতো এবারও তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, বটতলা, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।'

এ ব্যাপারে মুন্সীপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ইমান আলী বলেন, 'সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ যাপন করতে পেরে আমরা খুশি। প্রতি বছরই আমরা এভাবে ঈদসহ সব ধরনের ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছি।'

কালীগঞ্জ উপজেলার মুন্সীপাড়ার ঈদগাহ মাঠের সভাপতি মাওলানা মাছুম বিল্লাহ্ বলেন, 'সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিগত কয়েক বছর ধরে এই এলাকার মানুষ ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, শবে-কদর, শবে মেরাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন। সেই হিসেবে আজ শুক্রবার ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হয়েছে।'

জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে অনেক আগে থেকে কাকিনা, তুষভান্ডার ও চন্দ্রপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করে আসছেন। ঈদ উদযাপনে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য পুলিশী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

11h ago