ভারত-পাকিস্তানের দিকে এগুচ্ছে ‘বিপর্যয়’

ঘুর্ণিঝড় বিপর্যয়ের স্যাটেলাইট চিত্র। ছবি: ডন
ঘুর্ণিঝড় বিপর্যয়ের স্যাটেলাইট চিত্র। ছবি: ডন

পাকিস্তান ও ভারতের উপকূল অঞ্চলের দিকে তীব্র গতিতে ধেয়ে আসছে সাইক্লোন 'বিপর্যয়।' পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (পিএমডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি আগামী ২৪ ঘণ্টায় 'অত্যন্ত তীব্র পর্যায়ের ঘূর্ণিঝড়ে' রূপান্তরিত হতে পারে।

আজ রোববার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

পিএমডির কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা অবলম্বনের সুপারিশ করেছেন, কারণ এই ঘূর্ণিঝড় থেকে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষত, নিচু অঞ্চলগুলোতে।

শনিবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১০টায় একটি সতর্কবার্তা প্রকাশ করে পিএমডি। সেখানে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় এখন পাকিস্তানের করাচি থেকে ৮৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে, থাট্টার ৮৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ওরমারার ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।

পাকিস্তানের প্রধান আবহাওয়াবিদ ড. সরদার সরফরাজ বলেন, 'সাইক্লোনটি আরব সাগরের পূর্ব ও মধ্যবর্তী অংশে আরও সুসংহত ও বলিষ্ঠ আকার ধারণ করেছে।'

তিনি আরও জানান, এই ঘূর্ণিঝড় করাচি, থাট্টা, সুজাওয়াল, বাদিন, থারপার্কার জেলা এবং ভারতের গুজরাটের দিকে এগুচ্ছে।

আজ থেকে জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর।

'সম্ভবত ১৪ অথবা ১৫ জুন ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানবে। আগামী রোববার সন্ধ্যা নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হবে', যোগ করেন সরফরাজ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবাণীতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় 'বিপর্যয়' আরব সাগরে গত ১২ ঘণ্টায় তার তীব্রতা বজায় রেখেছে এবং উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

সতর্কবাণীতে আরও বলা হয়, 'ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার এবং দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে ঢেউয়ের উচ্চতা ২৫ থেকে ২৮ ফুট।'

অনুকূল পরিবেশ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঝড়ের মাত্রা বাড়তে পারে।

১১ জুন থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছে, কারণ সমুদ্রে উঁচু ঢেউসহ বৈরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

আসন্ন ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মাথায় রেখে করাচির কমিশনার এই প্রদেশের সব সমুদ্রতটে মানুষে আসা-যাওয়ার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

এ ছাড়া, কর্তৃপক্ষ ১১ জুন থেকে পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত করাচির জলসীমানায় মাছ ধরা, নৌযান চালানো, সাঁতার ও গোসল করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় ১৫ জুন পাকিস্তান ও এর সংলগ্ন গুজরাটের সৌরাষ্ট্র ও কুচ উপকূলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পারে।

আগামী ৫ দিন গুজরাটে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং বাতাসের গতিবেগ অনেক বেশি থাকতে পারে, বিশেষত সৌরাষ্ট্র ও কুচ অঞ্চলে। এই দুই অঞ্চলের উপকূলে সমুদ্র খুবই বিক্ষুব্ধ অবস্থায় থাকবে, বিশেষত বুধ ও বৃহস্পতিবার।

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় গুজরাটের জনপ্রিয় সমুদ্রতট থাটালে সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

আইএমডি গুজরাট, কেরালা, কর্ণাটক ও লাক্ষাদ্বীপে জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখতে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আইএমডি আরও জানিয়েছে, জেলা প্রশাসনকেও একই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে

Comments

The Daily Star  | English
Tarique Rahman on interim government

Interim govt must not be allowed to fail: Tarique addresses BNP rally

Thousands join BNP rally from Nayapaltan to Manik Mia Avenue

7h ago