নরসিংদী

লঞ্চঘাটের ইজারা নিয়ে আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কিশোর নিহত

সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নরসিংদী সদর উপজেলার কাউরিয়াপাড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদী সদর উপজেলায় লঞ্চঘাটের ইজারা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১ কিশোর নিহত হয়েছে এবং আরও ৩ জন আহত হয়েছে।

আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কাউরিয়াপাড়া এলাকায় ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিন মিয়া ও একই ওয়ার্ডের সাবেক পৌর কাউন্সিলর আলমাছ মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। 

সংঘর্ষে নিহত সাজিদ হোসেন (১৬) কাউরিয়াপাড়া এলাকার আমীর হোসেনের ছেলে। সংঘর্ষের সময় আহত সাজিদকে ঢাকা নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

আহত ৩ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বান চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে, একই বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২২ জুলাই শহর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান আহমেদ রাব্বিকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আজ তাকেও পুলিশ আটক করেছে।

পুলিশ জানায়, দুপুরে কাউরিয়াপাড়ার বাউলপাড়া নতুন লঞ্চঘাটে স্পিডবোড ঘাট দখল নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর আগে এ ঘাটের ইজারা পেয়েছিলেন মতিন মিয়া। কিন্তু সম্প্রতি ঘাটের ইজারা পান আলমাছ মিয়ার লোকজন। এরপরেই ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

দ্বন্দ্বের জেরে আজ দুপুরে কাউরিয়া পাড়া মসজিদের সামনে মতিন গ্রুপ ও আলমাছ গ্রুপের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে, উভয় গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

নিহত সাজিদের চাচা ইকবাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ভাতিজা সাজিদ দুপুরে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত হয়। পরে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায়।'

সংঘর্ষের বিষয়ে মতিন মিয়া ও আলমাছ মিয়ার মন্তব্য জানতে দুজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

যোগাযোগ করা হলে নরসিংদী সদর হাসপালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল কবির বাসার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ দুপুরে নরসিংদীর কাউরিয়াপাড়া থেকে ৪ যুবককে আহত অবস্থায় আমাদের এখানে আনা হয়। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।'

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খবর পেয়ে ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ৩ জনকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'মূলত লঞ্চঘাটের দখল নিয়ে দুই পক্ষ দ্বন্দ্বে জড়ায়। নিহত কিশোর আলমাছ গ্রুপের অনুসারী বলে জানতে পেরেছি। খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বান চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আধিপত্য বিস্তারসহ আরও কিছু বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। আজ দুপুরে আলমাছ গ্রুপের লোকজনকে মতিন গ্রুপের লোকজন ডেকে ঘাটে নিয়ে যায়। পরে তাদের মধ্যে কথাকাটি হয় ও পরে সংঘর্ষ হয়।'

সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
NID cards of Sheikh Hasina and family locked

NIDs of Hasina, 9 family members 'locked'

The NIDs of the 10 listed individuals were locked through an official letter on April 16

1h ago