বাদাম কেন খাবেন, দিনে কতটুকু খাওয়া উচিত

বাদাম কেন খাবেন
ছবি: সংগৃহীত

বাদাম একটি মুখরোচক খাদ্য। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদামসহ সব ধরনের বাদামে অনেক উপাদান আছে, যা শরীরের জন্য উপকারী।

তবে অন্য সব খাবারের মতো বাদাম খাওয়ারও একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বাদাম খেতে থাকলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। বাদামের পুষ্টিগুণ ও এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আমাদের জানিয়েছেন মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হসপিটাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারের পুষ্টিবিদ তাসরিয়ার রহমান

বাদামের পুষ্টি

যেকোনো বাদাম আমাদের প্রতিদিনের ডায়েটে গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন পাবলিক হেলথ অর্গানাইজেশন হেলদি ডায়েটের অংশ হিসেবে বাদাম খেতে বলে।

পুষ্টিবিদ তাসরিয়ার রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বাদামে আছে প্রচুর মনো ও পলি অ্যানস্যাচুরেটেড ফ্যাটস, প্রোটিন ও ডায়েটারি ফাইবার যা রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। প্রধানত ভিটামিন ই, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং আরও কিছু মিনারেলস যেমন ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন জিংক ও ম্যাঙ্গানিজ, কপার, সেলেনিয়াম আছে বাদামে।

স্বাস্থ্য উপকারিতা

  • বাদাম হৃদপিণ্ড ও রক্তের ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়
  • হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে
  • চোখ, ত্বক, হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য  করে
  • হজম প্রক্রিয়া মজবুত করে
  • মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়  
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। ওজন কমাতে সাহায্য করে
  • বিভিন্ন ধরনের ফাংগাল ও ভাইরাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করে
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে

প্রতিদিন কতটুকু বাদাম খাওয়া যেতে পারে

তাসরিয়ার রহমান জানান, ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের (এনএলএম) তথ্য অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি দিনে ৩০ গ্রাম বাদাম খেতে পারেন।

অতিরিক্ত বাদাম গ্রহণ করলে কী ক্ষতি হতে পারে

  • বাদামের অনেক উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড প্রধানত ওমেগা-৬।  ওমেগা -৬ ফ্যাটি এসিড যখন বেশি পরিমাণে থাকে তখন ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বিক্রিয়া করে টক্সিক হয়ে যায়।
  • ওমেগা ৬ অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হলে তা হার্টের রোগ, আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস এলার্জি ও অ্যাজমা রোগ সৃষ্টি করে।
  • অতিরিক্ত ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে প্রবেশের ফলে তা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডকে এন্টি ইনফ্লামেটরি হরমোনে কনভার্ট করে। ফলে শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।
  • বাদাম শরীরে অতিরিক্ত ফাইটিক এসিড তৈরি করে। শরীর যেহেতু  ফাইটিক এসিড সরাসরি হজম করতে পারে না, তাই হজমে বাধা সৃষ্টি হয়।
  • যাদের কিডনি ও গলব্লাডারের সমস্যা রয়েছে তাদের কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে বিদ্যমান অক্সালেট ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে।
  • অতিরিক্ত ক্যালরিসমৃদ্ধ হওয়ায় বাদাম বেশি পরিমাণে খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
  • বাদাম যদি লবণ দিয়ে ভেজে খাওয়া হয় তাহলে সেটি ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দিতে পারে।

     

Comments