‘আশ্বাস চাই না, যাত্রী চাই’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে সারা দেশে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিন সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীর তেমন কোনো দেখা মেলেনি।
আজ সোমবার সকাল পৌনে ১০টায় সেখানকার অন্তত ৯০ শতাংশ কাউন্টার খোলা দেখা গেছে।
কাউন্টার মাস্টারদের অনেকে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হরতালের কারণে যাত্রী সংখ্যা আরও কমে গেছে।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের এক কাউন্টার মাস্টার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গাড়ি ছাড়ার বিষয়ে আমাদের ওপর অনেক চাপ। গাড়ি ছাড়তে হলে যাত্রী দরকার। প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা অনেক আশ্বাস দেন। কিন্তু, আমরা বলি, আশ্বাস চাই না, যাত্রী চাই। যাত্রী পেলে আমাদের আর কিছু দরকার নাই। রাস্তায় যত বাধাই আসুক না কেন আমরা তা মোকাবিলা করবো।'
গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুরগামী সেবা গ্রিন লাইন পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল পর্যাপ্ত সংখ্যক যাত্রীর অভাবে বাস ছাড়তে পারিনি। তবে যারা টিকিট কেটেছিলেন তারা টাকা ফেরত নেননি। আজকে সাভারের নবীনগর কাউন্টার থেকে কয়েকজন যাত্রী পাওয়ায় গতকালকের যাত্রীদের নিয়ে সকাল ৮টায় আমাদের একটা বাস গোপালগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়েছে।'
'যাত্রীর সংখ্যা ক্রমেই কমছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এভাবে চলতে থাকলে আমরা চলবো কেমনে?'
'পরিবহন ব্যবসা শ্যাষ' বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অসুস্থ মাকে দেখতে মাগুরায় যাওয়ার জন্য গাবতলী বাস টার্মিনালে এসেছেন মাতোয়ারা বেগম (৩০)। তিনি গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করেন। ডেইলি স্টারকে মাতোয়ারা বলেন, 'আগে হরতালের সময়ও গাবতলীতে মানুষ দেখছি। গাড়ি চলছে। এখন দেখি বাস নাই।'
তিনি আরও বলেন, 'বাস কখন পাবো জানি না। যে বাসই পাবো সেটাতেই উঠবো।'
চুয়াডাঙ্গা ও দর্শনাগামী ডিডি পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আলমগীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকায় আমার দুই মাসের বাসা ভাড়া বাকি। গ্রামে মা-বাবাকে টাকা পাঠাতে পারতেছি না। হাওলাত করে চলতেছি। গাড়ি চললে টাকা পাই, না চললে পাই না।'
তিনি আরও বলেন, 'অবরোধ-হরতালের কারণে যাত্রী নাই। গাড়ি চলতেছে না। আমাদের আয়-রোজগার প্রায় বন্ধই বলতে পারেন।'
Comments