সন্ত্রাস করে নির্বাচন প্রতিহত করা যাবে না: ইসি আলমগীর

‘নির্বাচনী উৎসব ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনী হাওয়া, মিছিল, প্রচার শুরু হয়ে গেছে। ভোটারদের মধ্যে উৎসবের আমেজটা আসতে দু-একদিন সময় লাগবে।'
নারায়ণগঞ্জে মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। ছবি: সৌরভ হোসেন সিয়াম/স্টার

'সন্ত্রাসমূলক কার্যক্রম করে নির্বাচনকে প্রতিহত করা যাবে না' বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা শেষে তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুনের ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মো. আলমগীর বলেন, 'নির্বাচনকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে কেউ নাশকতামূলক কার্যক্রম করতে পারে, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট তৎপর আছে। এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য নির্বাচন কমিশন আশা করে, যারা এই বিষয়ে দায়িত্বে আছেন তারা আরও তৎপর থাকবেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হবে।'

'নির্বাচন আয়োজনের জন্য কয়েক লাখ লোক নিয়োজিত থাকবে। নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার কোনো সুযোগ নেই', যোগ করেন তিনি।

কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ভালো থাকবে উল্লেখ করে মো. আলমগীর বলেন, 'অনেক প্রার্থী আছেন এবং তাদের মধ্যে ভালো প্রতিযোগিতা হবে। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে সারা বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। আমি আরও ১৪টি জেলা ঘুরেছি। কিশোরগঞ্জ থেকে আমি এসেছি, পথে কোনো আইনশৃঙ্খলার অবনতি আছে বা ভোটের পরিবেশ নেই এমনটা দেখিনি। উৎসবের নির্বাচন মানেই ভোটার উপস্থিতি। শুধু প্রার্থীকে দিয়ে উৎসবের নির্বাচন বলা যায় না।'

সব ভোটকেন্দ্রে সকালে ব্যালট পাঠানো হবে জানিয়ে তিনি জানান, দুর্গম এলাকার বিষয়ে বিবেচনা করবে কমিশন।

তিনি বলেন, 'বিগত সবগুলো ভোটেই আমরা সকালে ব্যালটপেপার পাঠিয়েছি। এটার ভালো ফল আমরা পেয়েছি। অন্তত কেউ বলতে পারেনি, আগের রাতেই ভোট হয়েছে। এই ধরনের অপবাদ দেওয়ার আর যেন সুযোগ না হয়, নির্বাচন যেন বিশ্বাসযোগ্য হয় এজন্য সকালে ব্যালটপেপার পাঠানোর সিদ্ধান্ত।'

নির্বাচন উপলক্ষে সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'সেনাবাহিনী সব জায়গায় থাকবে। সেনা টহল মানে জনগণের জান-মাল, কেন্দ্র এবং ভোটার—সবারই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। বিনা দ্বিধায় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে উৎসবের সঙ্গে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।'

ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী প্রার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এক বনে যদি বাঘ থাকে আর যদি বাঘের চেয়ে ছোট অন্য কোনো প্রাণী থাকে, তাহলে সেই বন পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব বনবিভাগের। তেমনি আমাদের পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট, র‌্যাব, বিজিবি আছে; তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবেন। এখানে মাঠ সবার জন্য সমান। কর্মীর সংখ্যা তো আমি সমান করে দিতে পারবো না। কিন্তু কম কর্মী নিয়েও যেন বিনা বাধায় প্রচার করতে পারেন সেটা নিশ্চিত করবো আমরা।'

তিনি বলেন, 'নির্বাচনী উৎসব ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনী হাওয়া, মিছিল, প্রচার শুরু হয়ে গেছে। ভোটারদের মধ্যে উৎসবের আমেজটা আসতে দু-একদিন সময় লাগবে। প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে যাবেন, তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন, এলাকার জন্য কী উন্নয়ন করবেন সেইসব কথাবার্তা শুনবে, তারপর তারা উদ্বুদ্ধ হবেন।'

অবৈধ অস্ত্র জব্দ এবং বৈধ অস্ত্র জমা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, 'সারা বছরই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে। নির্বাচন উপলক্ষে এই কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্যই একজন বৈধ অস্ত্র নেন। তাই তাদের নিরাপত্তার খাতিরে বৈধ অস্ত্র জমার সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে অবৈধভাবে প্রদর্শন করতে পারবেন না।'

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'কেন্দ্রে প্রার্থীদের সব এজেন্ট আছে কি না, তা সকালেই নিশ্চিত করতে হবে। কারও এজেন্ট না থাকলে তাও দায়িত্বশীলদের জানাতে হবে। ফলাফল ঘোষণার সময়ও এজেন্টদের সই আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে।'

'দেখেন, বারবার ঝড়ে ঘর ভেঙেছে দেখে এবারও ঝড়ে ঘর ভাঙবে, তা নয়। এবার ঘর অনেক মজবুত,' বলেন তিনি।

Comments