শরীয়তপুরে দলীয় মিছিলে গরমে অসুস্থ হয়ে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু

মৃত মন্টু খান। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৩৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের মিছিলে গিয়ে তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে এক ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। 

মৃত মন্টু খান সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের আড়িগাঁও এলাকার কুটি মিয়া খানের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সেক্রেটারি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ শুক্রবার দলীয় মিছিল শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে মন্টু খান অসুস্থবোধ করেন এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে স্বজন ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শেহেরিয়ার ইয়াসিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যারা তাকে হাসপাতালে এনেছিলেন, তাদের কাছে জানতে পেরেছি তিনি নাকি আজ মিছিলে গিয়েছিলেন। পরে অসুস্থ বোধ করেন এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর তার শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে হাসপাতালে আনা হয়।'

'মন্টু খানকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখন তার দেহে রক্তের কোনো পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। এমনকি তার হৃদযন্ত্রও কাজ করছিল না। মূলত তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। পরে আমরা তার ইসিজি করি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন', বলেন তিনি।

চিকিৎসক শেহেরিয়ার ইয়াসিন বলেন, 'এখন যেহেতু তাপমাত্রা বেশি, তাই গরমের কারণে তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া যদি তার পূর্বে হৃদযন্ত্রজনিত কোনো সমস্যা থাকে, তাহলেও তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হতে পারে।'

শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ জেলা শহরে শোভাযাত্রার আয়োজন করে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন। 

শোভাযাত্রা উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জেলা শহরের শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হন। 

তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদ ফকিরের নেতৃত্বে আড়িগাঁও বাজার থেকে একটি মিছিল জেলা শহরে আসে। ওই মিছিলে স্লোগান দিতে দিতে আসেন মন্টু খান। দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে আড়িগাঁও বাজার থেকে মিছিল শুরু হয়। তিন কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মিছিলটি শহীদ মিনার চত্বরে পৌঁছায়।

এরপর সাড়ে ৫টার দিকে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে মিছিলটি পুনরায় শহীদ মিনার চত্বর থেকে চৌরঙ্গি মোরে বঙ্গবন্ধু চত্বরে আসে। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে সাড়ে ৬টার দিকে অসুস্থ হয়ে পরেন মন্টু খান। 

খবর পেয়ে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু হাসপাতালে যান এবং মন্টু খানের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী সিদ্দিক মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা তুলাসার ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের প্রোগ্রামে মিছিল নিয়ে বের হয়েছিলাম। মিছিলে যাওয়ার পর অনেক গরমে মন্টু ভাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে একটি দোকানে নিয়ে পানি খাওয়াই। একটু পরেই তিনি মাটিতে পড়ে যান। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন যে, তিনি মারা গেছেন।'

তুলাসার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদ ফকির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই গরমের মধ্যে মিছিল করলে কোনো নেতাকর্মী মারা যাবেন, তা ভাবতে পারিনি।'

শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগের সভাপতির স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আমরা প্রতিবছরই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করি। এ বছরও শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা করেছি। ওই শোভাযাত্রায় যোগ দিয়ে শ্রমিক লীগ নেতা মন্টু খানের মৃত্যুর বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।'

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

3h ago