ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে যত জনপ্রিয় খাবার

ঢাবি ক্যাম্পাসের খাবার
ছবি: প্রবীর দাশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গত ১ জুলাই পালন করেছে ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানেই বিচিত্র অভিজ্ঞতার সমাহার। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া ও বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো সময়ের পাশাপাশি যে স্মৃতি সবসময় উজ্জ্বল হয়ে থাকে তা হলো ক্যাম্পাসের খাবার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাবেক গ্রাজুয়েদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছিলাম ক্যাম্পাসে তাদের প্রিয় খাবার জায়গা সম্পর্কে। সে আলোচনায় যে জায়গাগুলোর নাম উঠে এসেছে তারই বর্ণনা রইল নিচে।

শ্যাডো

ছোট্ট দোকানটি মূলত লেবুর শরবত বা লেমোনেডের জন্য বিখ্যাত। তবে দোকানটির লুচি-ডাল হলো সেরা খাবার, যেটি কেবল বিকেলেই পাওয়া যায়। লুচি পরিবেশন করা হয় একদম গরম গরম। অর্থাৎ কড়াই থেকে সোজা উঠে আসবে আপনার প্লেটে।

যদি আপনি বিকেলের দিকে মল চত্বরের পাশ দিয়ে হেঁটে যান, তাহলে লুচি আর ডালের সুগন্ধই আপনাকে শ্যাডোর দিকে টেনে নিয়ে যাবে।

টিএসসি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিকে বোঝাতে একটি প্রবাদ প্রায়ই ব্যবহৃত হয়। আর সেটি হলো 'প্রাণের মেলা'। যদি আপনি কখনও টিএসসিতে আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে থাকেন, তাহলে বুঝতেই পারবেন যে এটি টিএসসির জন্য ব্যবহৃত সঠিক শব্দ।

টিএসসির জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হলো, এখানে সাশ্রয়ী মূল্যের খাবার পাওয়া যায়। হোক খিচুড়ি বা ভাতের সঙ্গে মুরগির মাংস; শিক্ষার্থীরা ঠিকই খাওয়ার জন্য লাইন ধরেন। দুপুরের খাবারের পাশাপাশি এখানে সকালের নাশতা আর হালকা নাশতাও পাওয়া যায়। সবসময়ই মানুষের ভিড় থাকে টিএসসিতে। লেবু চায়ে চুমুক দিতে দিতে গিটারে টুংটাং আওয়াজ টিএসটির খুব পরিচিত দৃশ্য।

হাকিম চত্বর

কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশে অবস্থিত হাকিম চত্বর খাবারদাবারের চেয়ে এর অবস্থানের কারণে বেশি জনপ্রিয়। এখানে খিচুড়ি আর স্যুপের পাশাপাশি মেলে শিঙাড়া পাকোড়ার মতো হালকা নাশতাও। আর অবশ্যই পাওয়া যায় চা।

খুব কম সময়ই এমন থাকে যে হাকিম চত্বরে ভিড় নেই। অনেক শিক্ষার্থীই আছেন যারা লাইব্রেরিতে পড়ার ফাঁকে দ্রুত কিছু খাওয়ার জন্য এখানে আসেন। এ ছাড়া গাছের ছায়ায় বসে দ্রুত খাওয়ার পর্ব সেরে নেওয়ার জন্যও হাকিম চত্বর আদর্শ জায়গা।

মামা হোটেল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন কিন্তু মামা হোটেলে যাননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ঢাবি ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থিত এই হোটেলিটি সবসময় মুখর থাকে শিক্ষার্থীদের পদচারণায়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হোটেলটির মালিকের সম্পর্ক খুবই চমৎকার, তিনি সবসময়ই তাদের হাসিমুখে স্বাগত জানান।

ফলে গরুর মাংস, মগজ ভুনা কিংবা চিংড়ির মতো বিশেষ পদ খেতে ইচ্ছা করলে যেমন ঢাবির ছাত্র-ছাত্রীরা ছুটে যান মামা হোটেলে তেমনি সাধারণ ভাত, ঝাল ফ্রাই বা ভর্তা-ভাজির জন্যও তাদের প্রিয় গন্তব্য এই হোটেল।

চারুকলার গেট

ঢাবির চারুকলা অনুষদের গেটে বসে একটি অস্থায়ী দোকান, যেটি শুধু বিকেলেই খোলে। সেখানে পাওয়া যায় বিশেষ স্বাদের চিকেন ফ্রাই। দারুণ স্বাদের এই চিকেন ফ্রাই খেতে রীতিমতো লাইন ধরতে হয়।

ভিন্ন স্বাদের সসের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় ছোট ছোট টুকরো করা মুরগির মাংস ভাজা। দামেও দারুণ সাশ্রয়ী। তবে এই চিকেন ফ্রাই খেতে হলে আপনাকে অবশ্যই লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হবে কিংবা ভিড়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে তারপর এই স্বাদ নিতে হবে।

আরও আছে

এই পাঁচটি জায়গা ছাড়াও ঢাবি ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে খাবারের জন্য জনপ্রিয় আরও বেশ কয়েকটি জায়গা আছে। যার মধ্যে রয়েছে আইবিএ ও এফবিএস ক্যান্টিন। তবে অনেকেই মনে করেন এই দুটি ক্যান্টিনের খাবারের দাম তুলনামূলক বেশি।

এ ছাড়া আছে নীলক্ষেতের ছোট্ট দোকান রয়্যাল তেহারি। মামা হোটেলের মতো এই হোটেলটিও ঢাবি শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান দখল করে রাখে।

কিংবদন্তী খাবারের দোকান মধুর ক্যান্টিনের নামও তালিকায় উল্লেখ করা যেতে পারে। যদিও এটির মূল গুরুত্ব দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে খুবই সাশ্রয়ী দামে খাবার খাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আরেকটি পছন্দের জায়গা ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া। যেখানে সবচেয়ে কম দামে খাবার পাওয়া যায়। ডিইউ কফি হাটেও পাওয়া যায় ফাস্ট ফুড ও বিভিন্ন ফলের জুস।

এই তালিকার বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরও অনেক খাবারের দোকান। যেগুলোর সঙ্গেও কারও না কারও প্রিয় স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার প্রিয় খাবার জায়গা কোনটি?

অনুবাদ করেছেন শেখ সিরাজুম রশীদ

 

Comments

The Daily Star  | English

Of music, colours and festivities: Nation welcomes Bangla New Year

Pahela Baishakh, the first day of the Bangla calendar, is being celebrated with music, colourful rallies, and festive events.

1h ago