কালো টাকা সাদা করতে ‘ভুয়া’ পে অর্ডার দিয়েছিলেন এস আলমের দুই পুত্র

বিতর্কিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলমের দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলম মাহির ৫০০ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার মধ্যেমে ৭৫ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন। দ্য ডেইলি স্টারের প্রাপ্ত নথি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরর কাছে কর কর্মকর্তা এবং দুই ভাইকে দেওয়া নোটিশ অনুসারে, কর ফাঁকি দিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ব্যাংকের দুটি 'পে অর্ডারের' মাধ্যমে অনিয়মের আশ্রয় নেন তারা। এই ব্যাংকটি নিয়ন্ত্রণ করে সাইফুল আলমের মালিকানাধীন এস আলম গ্রুপ।

নথি অনুসারে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ২৫ কোটি টাকার দুটি পে অর্ডারের মাধ্যমে এই কালোটাকা সাদা করার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হন আশরাফুল ও আসাদুল।

এর কয়েক মাস পর দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় পেমেন্টে সফল হন তারা। এতে বোঝা যায় প্রথম দুটি পে অর্ডার ভুয়া ছিল।

কালো টাকা সাদা করতে তাদেরকে বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। টাকা সাদা করার সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও তারা এই সুবিধা পেয়েছেন। সেই সঙ্গে দায়মুক্তিও পেয়েছেন তারা।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ১০ শতাংশ কর দেওয়ার মাধ্যমে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার অনুমতি দেয়।

এনবিআর এর তথ্য অনুসারে, সেই অর্থবছরে মোট ২ হাজার ৩১১ জন কালো টাকা সাদা করার এই সুবিধাটি ব্যবহার করেছিলেন। তারা নগদ এবং ব্যাংক আমানতে ১ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করেন।

কর কর্মকর্তারা জানান, ব্যক্তিগত পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ করের হার বিবেচনায় নিলে আশরাফুল ও আসাদুলকে অপ্রদর্শিত ৫০০ কোটি টাকার বিপরীতে কমপক্ষে ১২৫ কোটি টাকা কর দিতে হতো। অথচ তারা মাত্র ৫০ কোটি টাকা দিয়েই এই টাকা সাদা করে নেন।

তাদের ট্যাক্স রিটার্ন অনুসারে, আশরাফুল এবং আসাদুল ২০২১ অর্থবছরে তাদের নিট সম্পদ দেখিয়েছেন যথাক্রমে ২৫০ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং ২৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা।

আশরাফুল তার টিন সার্টিফিকেটে নিজেকে 'জাতীয় পরিচয়পত্রবিহীন বাংলাদেশি নাগরিক' এবং আসাদুল, 'বিদেশী (অ-বাংলাদেশি)' হিসেবে নিজের পরিচয় উল্লেখ করেছেন।

দৈনিক সমকালের গতমাসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তাদের তিন ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল এবং আসাদুল আলম ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন।

তারা একই দিনে বিদেশি নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমোদন পান। এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার এক বছর আগে সাইফুল আলম ও তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য ট্যাক্স ফাইলে নিজেদেরকে 'বিদেশি' বা 'অ-বাংলাদেশি' হিসাবে পরিচয় দিয়েছিন।

(সংক্ষেপিত অনুবাদ, বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন এখানে)

 

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

2h ago