খাওয়া ছাড়াও ধানমন্ডিতে সময় কাটানোর আরও যত উপায়

ধানমন্ডি
ছবি: জান্নাতুল বুশরা

ধানমন্ডি ঢাকার বেশ অভিজাত আর ব্যস্ত এলাকা। এই এলাকাটি মূলত পরিচিত তীব্র যানজট, উচ্চস্বরে বেজে চলা যানবাহনের হর্ন আর বিভিন্ন ধরনের খাবারের দারুণ সব রেস্তোরাঁর জন্য।

তবে এসবের বাইরে ধানমন্ডিতে এখনও কিছু স্থান রয়েছে যেখানে আপনি শহুরে জীবনের কোলাহল পেছনে ফেলে কিছু সময় কাটাতে পারেন নীরবে, কাটাতে পারেন সত্যিকারের অবকাশ। ধানমন্ডি লেকের ধারের নিরিবিলি পথে যেমন হাঁটতে পারেন, তেমনি আছে মোঘল আমলের ঐতিহ্যের সঙ্গে সময় কাটানোরও সুযোগ। ধানমন্ডির প্রকৃত আমেজ পেতে হলে যে পাঁচটি কাজ অবশ্যই করা উচিত, তার একটি তালিকা করেছি আমরা। দেখে নিতে পারেন এক ঝলকে।

ধানমন্ডি লেকে বড়শি দিয়ে মাছ ধরা

এই যান্ত্রিক শহরের ঠিক প্রাণকেন্দ্রে বসে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সুযোগ কিছু সময়ের জন্য হলেও আপনার চোখ স্ক্রিন থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। অনেকের জন্য মাছ ধরা এক ধরনের ধ্যানও।

ধানমন্ডি লেক বড়শি দিয়ে মাছ ধরার জন্য দারুণ জায়গা। আপনি যদি মাছ ধরতে পছন্দ করেন, তাহলে শান্ত লেকের পানিতে বড়শি ফেলে বসে থাকাও হবে দারুণ প্রশান্তির। সেজন্য আপনাকে খুব সহজ একটি কাজ করতে হবে, আর সেটি হলো মাছ ধরার জন্য নির্ধারিত স্থানে বসার জায়গা পেতে টিকিট কাটতে হবে। শুক্র ও শনিবার এই এলাকায় মাছ ধরার অনুমতি রয়েছে। তাই প্রকৃতির সঙ্গে নিরিবিলিতে বসে সময় কাটানোর এই সুযোগ নিন, শহুরে কোলাহল থেকে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গিয়ে নিন নতুন অভিজ্ঞতা।

লেকের পানিতে নৌকা ভ্রমণ

ধৈর্য ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে বড়শি ফেলে মাছ ধরা কিন্তু বেশ কঠিন কাজ। যদি আপনি মাছ ধরার কাজে যথেষ্ট আগ্রহী না হন কিংবা কাজটি আপনার আয়ত্তে না থাকে; তাহলেও সমস্যা নেই। আপনার জন্য ধানমণ্ডি লেকে রয়েছে নৌকা। যে বাহনে চড়ে উপভোগ করতে পারেন লেকের নির্মল আনন্দ।

সূর্য ডোবার আগে কিংবা খুব ভোরে শান্ত লেকের জলে নৌকা চালানো হতে পারে একটি দারুণ অভিজ্ঞতা। লেকের পানিতে ভেসে থাকা প্রাণবন্ত আকাশের প্রতিচ্ছবি এবং চারপাশের সবুজ পরিবেশ আপনার মনকে শান্ত করবে, আত্মাকে দেবে স্বস্তি।

ধানমন্ডি শাহী ঈদগাহ: সময়ের পরিভ্রমণ

আপনার যদি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি মুগ্ধতা থাকে তাহলে ঘুরে আসতে পারেন ধানমন্ডির শাহী ঈদগাহ। ঢাকায় মুগল আমলের অন্যতম স্থাপনা এটি, যা আপনাকে এক পলকে নিয়ে যাবে শত বছর পেছনে।

এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৬৪০ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় পুত্র সুবাদার শাহ সুজার শাসনামলে।

সন্ধ্যায় গেলে দেখতে পাবেন, ঈদগাহজুড়ে খেলা করছে শিশুরা। আপনি ইতিহাসপ্রেমী হোন বা হোন সাধারণ একজন দর্শনার্থী, ধানমন্ডি ঈদগাহ সবসময়ই আপনাকে স্বাগত জানাবে সমৃদ্ধ এক ইতিহাসের বুকে পদচারণার।

নতুন চোখে দেখুন বায়োস্কোপ

শাহী ঈদগাহ থেকে বেরিয়ে কয়েক পা হাঁটলেই ৬/এ নম্বর সড়কের আনাম র‌্যাংগস প্লাজার সামনে দেখা মিলবে মোহাম্মদ হিরুর। সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন তার সেই বিখ্যাত লাল কাপড়ে ঢাকা বায়োস্কোপ নিয়ে তিনি বসে থাকেন বিকাল ৫টার পর থেকে।

আপনি যদি হালের ডিজিটাল কন্টেন্ট দেখে দেখে বিরক্ত হয়ে গিয়ে থাকেন তাহলে এবার মোহাম্মদ হিরুকে কিছুক্ষণের জন্য সুযোগ দিন। তিনি তার গান আর বায়োস্কোপের বিচিত্র সব দৃশ্য দিয়ে আপনার মন ভোলাবেন, আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন ছোট্টবেলায়। রঙিন আলখাল্লায় আপাদমস্তক মোড়া মোহাম্মদ হিরু আর যাই করুন, আপনাকে হতাশ করবেন না।

চিত্রশালার জগতে ঢুঁ মারুন

আপনি যদি শিল্প ও সংস্কৃতির অনুরাগী হন তাহলে ধানমন্ডির আর্ট গ্যালারি বা চিত্রশালাগুলো আপনাকে কিছুক্ষণের জন্য ব্যস্ত জগৎ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে। যেমন গ্যালারি চিত্রক, যেটির প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ মুনিরুজ্জামান। আরেকটি উল্লেখযোগ্য গ্যালারি হলো বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টস। এ দুটি গ্যালারিতেই স্থানীয় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হয়। যা নিঃসন্দেহে আপনার চিন্তার খোরাক জোগাবে।

অনুবাদ করেছেন শেখ সিরাজুম রশীদ

 

Comments

The Daily Star  | English

Interest payments, subsidies soak up almost half of budget

Interest payments and subsidies have absorbed nearly half of Bangladesh’s total budget expenditure in the first seven months of the current fiscal year, underscoring growing fiscal stress and raising concerns over public finances.

3h ago