ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনে কী সমস্যা

জাপান সফরে থাকাকালীন ২৯ মে টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে ৩০তম নিক্কেই ফোরামে 'ফিউচার অব এশিয়া'র উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, 'আমরা জনগণকে বলছি, নির্বাচন এ বছরের শেষে ডিসেম্বরে অথবা সর্বোচ্চ আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে কিছু রাজনীতিবিদ নির্বাচনের জন্য জুন পর্যন্ত অপেক্ষা কেন, ডিসেম্বরেই নির্বাচন কেন নয়, সেই প্রশ্ন তুলছেন। দেশের সব রাজনৈতিক দল নয়, শুধু একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে।'
তিনি 'একটি দল' বলতে বিএনপিকে ইঙ্গিত করেছেন। কেননা তারা বারবারই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।
গণমাধ্যমের খবর বলছে, শুধু বিএনপি নয়, দেশের অর্ধ শতাধিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এজন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চান দলগুলোর নেতারা। না হলে এপ্রিলের শেষদিকে রাজপথে নামার কর্মসূচি দেওয়ার কথাও জানান তারা। এ নিয়ে বিএনপি ও তার মিত্রদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। এর মধ্যে আছে এলডিপি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ ইত্যাদি। (যুগান্তর, ৩০ মার্চ ২০২৫)
শুধু একটি দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়—প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের বিষয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছেন, কমপক্ষে ২০টি নিবন্ধিত দলসহ প্রায় সব দলই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এলডিপিসহ বিএনপি নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনে শরীক সকল দল চায় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। এ নিয়ে টালবাহানার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। কিন্তু এই সরকার সেই পথে না হেটে ক্ষমতায় থাকার রাস্তা পাকাপোক্ত করার চেষ্টায় ব্যস্ত। (সমকাল, ৩০ মে ২০২৫)
নির্বাচনের উপযুক্ত মাস
বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যে ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে মাত্র একটি হয়েছে জুনে, একটি মে মাসে। বাকি ১০টি নির্বাচন হয়েছে তুলনামূলক শুকনো মৌসুমে।
প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ; দ্বিতীয়টি ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি; তৃতীয়টি ১৯৮৬ সালের ৭ মে; চতুর্থটি ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ; পঞ্চমটি ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি; ষষ্ঠটি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি; সপ্তমটি ১৯৯৬ সালের ১২ জুন; অষ্টমটি ২০০১ সালের ১ অক্টোবর; নবমটি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর; দশমটি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি; একাদশটি ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর এবং সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয় ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। কেননা ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল সপ্তম জাতীয় নির্বাচন একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য। ষষ্ঠ সংসদ গঠন করা হয়েছিল সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করতে ত্রয়োদশ সংশোধনী আনার জন্য। যেহেতু ত্রয়োদশ সংশোধনীর আলোকে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয় এবং তাদের মেয়াদ ছিল তিন মাস, ফলে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ছিল।
১৯৮৬ সালের ৭ মে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনও হয়েছিল বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে। বন্দুকের নলের মুখে ক্ষমতা দখলের পরে এইচ এম এরশাদ তার ক্ষমতার বৈধতার জন্য এই নির্বাচনটি করেন। সেখানে সব দলের অংশগ্রহণ কিংবা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের চেয়ে বেশি জরুরি ছিল কোনোমতে একটি নির্বাচন আয়োজন করা।
এই দুটি নির্বাচনের বাইরে বাকি সবগুলো হয়েছে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, অক্টোবর ও ডিসেম্বরে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে দুটি, ফেব্রুয়ারিতে তিনটি, মার্চে দুটি, অক্টোবরে একটি এবং ডিসেম্বরে দুটি নির্বাচন হয়েছে। অর্থাৎ দেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত অধিকাংশ নির্বাচনই হয়েছে বছরের এমন সময়ে, যখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকে। ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকে।
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এপ্রিল তথা বাংলা বছরের বৈশাখ মাসের শুরু বা জ্যৈষ্ঠের শেষ থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম শুরু হয়—যার তীব্রতা বাড়ে মে মাসে। জুন মাসেও বৃষ্টি হয়। মে-জুনে দেশের আবহাওয়া কেমন থাকে, তা বছরের এই সময়েই টের পাওয়া যাচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ৩০ মে সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সারা দেশে বৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হওয়ায় বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে উপকূলীয় জেলাগুলো।
প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে সময়ের কথা বলেছেন তার অর্থ এই নয় যে, ২০২৬ সালের জুন মাসেই নির্বাচন হবে। বরং তিনি বলছেন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন—এই ছয় মাসের মধ্যে যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। সরকার চাইলে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেও ভোট হতে পারে। কেননা ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে রমজান শুরু, ফলে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়কাল নির্বাচনের অনুকূলে থাকবে না। সেক্ষেত্রে মার্চের শেষদিকে হতে পারে। যদিও সেটা কঠিন। কেননা, এরপর এপ্রিল থেকে জুন ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির মৌসুম। জুলাই-আগস্টে বন্যার শঙ্কা থাকে—যার রেশ থাকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
মূলত জাতীয় নির্বাচনের সবচেয়ে ভালো সময় অক্টোবর থেকে মার্চ। বছরের বাকি ছয় মাস প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগের শঙ্কা থাকে।
জুনেও কি ভোট হবে?
ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন করা না গেলে জুনেও নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কেননা সরকার যদি ২০২৬ সালের জুনে নির্বাচন করতে চায়, তাহলে তফসিল ঘোষণা করতে হবে এপ্রিলে। ওই সময়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে প্রার্থীদের নানা অসুবিধায় পড়তে হবে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোই জুনে নির্বাচন করতে আগ্রহী হবে না। ফলে নির্বাচন হয়তো আরও পিছিয়ে যেতে পারে।
সম্ভবত এসব বাস্তবতা মাথায় রেখেই বিএনপি ডিসেম্বরেই নির্বাচন চাচ্ছে। এমনকি সেনাপ্রধানও বলেছেন, তিনি মনে করেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত। জামায়াতে ইসলামীও ফেব্রুয়ারিতে এবং সম্ভব না হলে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তথা জুলাই অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা তরুণদের দলটি যদি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বিরোধিতা করে এবং নানা কারণে যদি আগামী বছরের জুনেও নির্বাচন না হয়, তাহলে এই সময়কালে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে রোহিঙ্গা ও আরাকান আর্মি ইস্যুতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে এবং তার ফলে দেশের অবস্থা কী হবে, তা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
বিচার ও সংস্কার
অন্তর্বর্তী সরকার তাদের যে অগ্রাধিকারের তালিকা ঠিক করেছে সেটি এরকম—১. জুলাই অভ্যুত্থানের সময় গণহত্যার বিচার; ২. সংস্কার এবং ৩. নির্বাচন।
বিচার একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। যেহেতু বিচারের মূল কাজগুলো হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এবং এখানে বিচারের স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার একটা বাধ্যবাধকতা আছে; মূল আসামি শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ অনেক নেতাই বিদেশে এবং কিছু নেতা দেশেও আত্মগোপনে আছেন। ফলে তাদেরকে হাজির করে অথবা তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য শেষ করা, বিশেষ করে পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপনে কোনো ধরনের তাড়াহুড়া করার সুযোগ নেই। তাড়াহুড়া করে বিচার সম্পন্ন করতে চাইলে এটি দেশে তো বটেই, আন্তর্জাতিকভাবেও প্রশ্নের মুখে পড়বে।
ফলে বিচারের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এটি দীর্ঘদিন চলমান থাকবে এবং নির্বাচনের পরে যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন, তারা প্রক্রিয়াটি চালু রাখবে—এমন অঙ্গীকার থাকতে হবে। কিন্তু বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না—এই সিদ্ধান্তে স্থির থাকলে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরেও নির্বাচন সম্ভব হবে না।
দ্বিতীয়ত সংস্কার। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দ হচ্ছে 'সংস্কার'। কিন্তু গত প্রায় ১০ মাসে রাষ্ট্রের কোথায় কতটুকু সংস্কার হলো, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের অন্ত নেই। ১১টি সংস্কার কমিশন হয়েছে। তারা কয়েক হাজার পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে কয়েকশ সুপারিশ দিয়েছে। এসব সুপারিশের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা হয়েছে। কিন্তু মৌলিক অনেক বিষয়ে যে প্রধান দলগুলোর মধ্যে ঐক্য হয়নি, তা এরইমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তার মানে সংস্কারও একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
গত ১০ মাসে বিচারালয়ে অনেকগুলো বড় ঘটনা ঘটেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার ছেলে তারেক রহমানসহ দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে হওয়া মামলাগুলো খারিজ হয়েছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের এক শীর্ষ নেতাকে খালাসও দেওয়া হয়েছে।
অসংখ্য প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা, ভবন ও সড়কের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও শেখ পরিবারের লোকদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য এটা করা হলেও নাম বাতিলের তালিকায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদের মতো জাতীয় নেতা যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন কবি জীবনানন্দ দাশ, বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু, অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের মতো মানুষেরাও। ফলে এসব পরিবর্তন বা সংস্কার সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কী ভূমিকা রাখছে বা রাখবে—তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে এসব সংস্কারের কী সম্পর্ক, সেই প্রশ্নও আছে। গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে যে মব ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চলছে, গত ১০ মাসেও তা থামানো যায়নি।
কেন দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ
সরকারি পরিসংখ্যান যাই বলুক না কেন, দেশের অর্থনীতি যে ভালো অবস্থায় নেই, সেটি সাধারণ মানুষ তার জীবন দিয়ে উপলব্ধি করছে। গত ১৮ মে প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপের ত্রৈমাসিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২৪) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছরের ব্যবধানে বেকারত্বের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে দেড় লাখ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ হিসাবে, ২০২৪ সাল শেষে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা সাড়ে ২৫ লাখ। গত বছর বেকারের হার ছিল ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। (প্রথম আলো, ১৯ মে ২০২৫)
বাংলাদেশ ইকোনোমিক রিভিউর তথ্য বলছে, কৃষি ও সেবা খাতে কম প্রবৃদ্ধির কারণে চলতি অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে তিন দশমিক ৯৭ শতাংশ। করোনা মহামারি শুরুর অর্থবছর বাদ দিলে গত ৩৪ বছরের মধ্যে তা সর্বনিম্ন। এ বছরের শুরু থেকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও কারখানা বন্ধ থাকাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ছিল নাজুক। ফলে জিডিপিতে কম প্রবৃদ্ধি সেই বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটেছে। (দ্য ডেইলি স্টার অনলাইন, ২৮ মে ২০২৫)
সুতরাং, গত ১০ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে কী করেছে বা করতে পেরেছে, তা খুব পরিষ্কার নয়। ফলে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত তারা ক্ষমতায় থেকে পরিস্থিতির কতটুকু উন্নতি করতে পারবে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা আছে।
সব মিলিয়ে দেশের যে পরিস্থিতি; নানা ইস্যুতে জনমনে যে সন্দেহ; রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও মব বন্ধের কোনো আলামত দৃশ্যমান না হওয়া এবং সংস্কার ইস্যুতে সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে জনমনে আস্থার ঘাটতি—সব মিলিয়ে আগামী ডিসেম্বর নয়, বরং তার আগেই নির্বাচন করে ফেলা সম্ভব এবং সম্ভবত সেটাই দেশ ও জনগণের জন্য তো বটেই, সরকারের জন্যও মঙ্গলজনক।
আমীন আল রশীদ: সাংবাদিক ও লেখক
Comments