গুলিস্তানে বিস্ফোরণ

কাতারপ্রবাসী সুমনের মরদেহ জোর করে নিয়ে গেল স্বজন-বন্ধুরা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

গুলিস্তানে বিস্ফোরণে নিহত কাতারপ্রবাসী মো. সুমনের (২১) মরদেহ পেতে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অপেক্ষা করেছিলেন তার স্বজন-বন্ধুরা। কিন্তু ময়নাতদন্তের আগে মরদেহ দিতে চায়নি পুলিশ। পরে সুমনের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু ও প্রতিবেশীসহ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন এসে রাত পৌনে ১০টায় জোর করে ঢামেক মর্গ থেকে মরদেহটি নিয়ে যায়।

ঘটনাস্থল থেকে দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক জানান, এ ঘটনায় ঢামেক হাসপাতালে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। মরদেহ নিতে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ধ্বস্তাধস্তি হয়।

ঢামেক থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগে সুমনের বড় বোন সোমা আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কী করব? এভাবে মরদেহ ফেলে রাখব? আপনারা (সাংবাদিক) আছেন শুধু ভিডিও করতে। আমাদের দিকে দেখবে কে?'

সুমনের মরদেহ নিয়ে তার স্বজন, বন্ধু ও প্রতিবেশীরা ঢামেক হাসপাতালে বাইরে এসে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের সুড়িটোলা বাসার উদ্দেশে রওনা দেন।

সেই সময় সুমনের বন্ধুরা দাবি করেন, জরুরি বিভাগের মর্গের কর্মচারীরা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন এবং টাকা দাবি করেছেন।

তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জরুরি বিভাগের মর্গে কর্মরত কর্মচারী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।

মাত্র ১০ দিন আগে ৪ মাসের ছুটিতে কাতার থেকে দেশে ফিরেছিলেন মো. সুমন (২১)। সুমনের বাসা গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজার সংলগ্ন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মায়ের জন্য ইফতার আনতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি।

সুমনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এবারের ছুটিতে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিলেন সুমন। গতকাল তিনি হবু স্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন।

সন্ধ্যায় সুমনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সেখানে সুমনের বড় বোন সোমা আক্তার চিৎকার করে বলছিলেন, 'দয়া করে আমার ভাইরে ফিরায়া দেন। বিয়ে করতে দেশে এসেছিল সে। আমরা গতকাল মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। দয়া করে তাকে ফিরায়ে দিন।'

তাদের আরেক বোন রুমা আক্তার ও ভাই সাফায়েত সুমনের মরদেহ ময়নাতদন্ত না করার জন্য হাসপাতালের কর্মীদের অনুরোধ করছিলেন।

কাতারে চিকিৎসা সহকারী হিসেবে কাজ করতেন সুমন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

1h ago