তানজিদের ফিফটির পর রিশাদের তাণ্ডবে সিরিজ বাংলাদেশের

দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো লঙ্কানদের হারাল টাইগাররা।
বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সোমবার তৃতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ। ফলে ২-১ ব্যবধানে তিন ম্যাচের সিরিজ জিতে নিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো লঙ্কানদের হারাল টাইগাররা।

রিশাদের তাণ্ডব, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

রিশাদ হোসেন যখন ক্রিজে গেলেন, তখন ৮৩ বলে ৫৮ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। হাতে মাত্র ৪ উইকেট থাকায় কিছুটা চাপে ছিল টাইগাররা। তবে সেই চাপ এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে ব্যাট হাতে রিশাদ আবির্ভূত হন রুদ্রমূর্তিতে।

পাল্টা আক্রমণে চার-ছয়ের ফুলঝুরি ছুটিয়ে স্রেফ ১৮ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৫ চার ও ৪ ছক্কা। এতে ২৩৬ রান তাড়ায় ৫৮ বল হাতে রেখেই শেষ হাসি হাসে স্বাগতিকরা। ঝড়ো ব্যাটিংয়ের আগে বল হাতে ১ উইকেট নেন রিশাদ। সব মিলিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তার হাতে। 

'খ্যাপাটে' রিশাদের আগে ৮১ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য সরকারের কনকাশন বদলি হিসেবে সুযোগ পাওয়া তানজিদ হাসান তামিম। এছাড়া, মুশফিকুর রহিম অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৩৭ রানে। রিশাদের সঙ্গে তার ২৫ বলের অবিচ্ছিন্ন বিধ্বংসী জুটিতে আসে ৫৯ রান। বলা বাহুল্য, সেখানে সিংহভাগই রিশাদের অবদান।

লঙ্কানদের হয়ে ৪৮ রানে ৪ উইকেট নেন লাহিরু কুমারা। রিশাদের তাণ্ডব হজম করা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ৬৪ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৪০.২ ওভারে ২৩৭/৬ (এনামুল ১২, তানজিদ ৮৪, শান্ত ১, তাওহিদ ২২, মাহমুদউল্লাহ ১, মুশফিক ৩৭*, মিরাজ ২৫, রিশাদ ৪৮*; থিকশানা ০/৩৫, মাদুশান ০/৫২, কুমারা ৪/৪৮, হাসারাঙ্গা ২/৬৪, ওয়েলালাগে ০/৩০, আসালাঙ্কা ০/৮)।

হাসারাঙ্গার এক ওভারে ২৪ রান নিলেন রিশাদ

৪০তম ওভারে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ওপর চড়াও হয়ে রিশাদ হোসেন একাই নিলেন ২৪ রান। টানা দুই ছক্কায় ওভার শুরুর পর টানা তিনটি চার মারলেন তিনি। শেষ বলটি খেললেন ডট। তার কল্যাণে স্রেফ ২১ বলেই মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তার জুটির ফিফটি পূর্ণ হয়ে গেল।

ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়াল ৬ উইকেটে ২৩৩ রান। জয় এখন তাদের হাতের মুঠোয়। ৬০ বলে দরকার স্রেফ ৩ রান।

ক্রিজে এসেই রিশাদের ঝড়ো ব্যাটিং

ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য আরও চাই ৫৮ রান। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিজে গিয়েই পাল্টা আক্রমণ শানলেন রিশাদ হোসেন। শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ওপর চড়াও হলেন তিনি।

৩৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্লগ সুইপ করে ছক্কা হাঁকানোর পর পঞ্চম বলটি মিডউইকেট দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠান রিশাদ। এর মাঝে চতুর্থ ডেলিভারিতে মারেন চার। সব মিলিয়ে ওভারটি থেকে আসে ১৬ রান।

তৃতীয় বলে অবশ্য বড় বাঁচা বেঁচে যান রিশাদ। তার বিপক্ষে এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া না পেয়ে রিভিউ নিয়েছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক কুসল মেন্ডিস। কিন্তু বল ট্র্যাকিংয়ে আম্পায়ার্স কল হওয়ায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলায়নি।

৩৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৯৪। ক্রিজে মুশফিকুর রহিম ২৯ বলে ২৬ ও রিশাদ ৫ বলে ১৬ রান খেলছেন।

মিরাজকে বিদায় করে জুটি ভাঙলেন হাসারাঙ্গা

ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার শর্ট পিচ ডেলিভারি সীমানার বাইরে পাঠাতে চেয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দূরত্ব পেলেন না তিনি। কাউ কর্নারে তার ক্যাচ লুফে নিলেন প্রমোদ মাদুশান।

৪০ বলে ২৫ রানে আউট হলেন মিরাজ। এতে ভাঙল মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তার ৬২ বলে ৪৮ রানের জুটি। ৩৭তম ওভারে দলীয় ১৭৮ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ক্রিজে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী হলেন রিশাদ হোসেন।

চাপ সামলে জুটি গড়ার চেষ্টায় মুশফিক-মিরাজ

লক্ষ্য তাড়ায় শক্ত অবস্থান থেকে পা হড়কে গেছে বাংলাদেশের। দ্রুত পড়েছে ৩ উইকেট। এরপর জুটি গড়ার চেষ্টায় আছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

শ্রীলঙ্কা অবশ্য ৩২তম ওভারে মিরাজের বিপক্ষে একটি রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। রিপ্লেতে দেখা যায়, প্রমোদ মাদুশানের শর্ট বল পুল করতে যাওয়া মিরাজের ব্যাটের কোথাও লাগেনি।

৩৩ ওভারে স্বাগতিকদের রান ৫ উইকেটে ১৬১। ক্রিজে মুশফিক ২৩ বলে ২২ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২৭ বলে ১২ রানে অপরাজিত আছেন। বাকি ১৭ ওভারে ৭৫ রান চাই বাংলাদেশের।

৮৪ রানে হাসারাঙ্গার শিকার তানজিদ

চার মাসের বেশি সময় পর ওয়ানডে খেলতে নেমে ঝলক দেখালেন তানজিদ হাসান তামিম। সৌম্য সরকারের কনকাশন বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির আশাও জাগালেন তরুণ বাঁহাতি ওপেনার। তবে ৮১ বলে ৮৪ রানে থামতে হলো তাকে। তার ব্যাট থেকে এলো ৯ চার ও ৪ ছক্কা।

শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বল ছক্কায় ওড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাতে-বলে ঠিকঠাক হয়নি। তানজিদের ক্যাচ লং অনে হাতে জমালেন চারিথ আসালাঙ্কা।

১০৫ থেকে ১৩০ অর্থাৎ দলীয় ২৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপ বাড়ল বাংলাদেশের। ২৬ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৩১ রান। জয়ের জন্য বাকি ২৪ ওভারে আরও ১০৫ রান দরকার টাইগারদের। ক্রিজে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী হলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মাহমুদউল্লাহকেও টিকতে দিলেন না কুমারা

বাংলাদেশের ইনিংসে শ্রীলঙ্কার পেসার লাহিরু কুমারার আঘাত চলছেই। নিজের পরপর দুই ওভারে দুই শিকার ধরলেন তিনি। সব মিলিয়ে ম্যাচে এটি তার চতুর্থ উইকেট। এবারে তিনি আউট করলেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে।

জায়গায় দাঁড়িয়ে অফ স্টাম্পের বাইরের ভালো লেংথের ডেলিভারিতে খোঁচা দিলেন গত ম্যাচে শূন্য রানে সাজঘরের পথ ধরা মাহমুদউল্লাহ। উইকেটের পেছনে ক্যাচ লুফে নিতে কোনো বেগ পেতে হলো না কুসল মেন্ডিসের।

৪ বল খেলে মাহমুদউল্লাহর রান ১। দলীয় ৮ রানের মধ্যে দুটি উইকেট পড়ায় বেশ চাপে পড়ল বাংলাদেশ। ২৪ ওভারে তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১২২ রান। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ৭৬ বলে ৮৩ রানে খেলছেন। আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম অপরাজিত আছেন ১ বলে ১ রানে।

আক্রমণে ফিরেই হৃদয়কে বিদায় করলেন কুমারা

২২তম ওভারে আক্রমণে ফিরে আবার আঘাত করলেন লাহিরু কুমারা। শ্রীলঙ্কার পেসারের এটি তৃতীয় শিকার। তার শর্ট ডেলিভারি পুল করার চেষ্টায় গড়বড় করে ফেললেন তাওহিদ হৃদয়। ডিপ ফাইন লেগে প্রমোদ মাদুশানের তালুবন্দি হলেন তিনি।

৩৬ বলে ২২ রানে সাজঘরে ফিরলেন হৃদয়। তার ব্যাট থেকে আসেনি কোনো বাউন্ডারি। হৃদয়ের বিদায়ে ভাঙল তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গে তার ৪৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

২২ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১০৫। একপ্রান্ত আগলে থাকা তরুণ ওপেনার তানজিদ খেলছেন ৬৭ বলে ৬৮ রানে। তার সঙ্গী মাত্রই নামা অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ।

Lahiru Kumara
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

জীবন পেলেন তানজিদ

প্রমোদ মাদুশানকে টানা তৃতীয় চার মারার চেষ্টায় সুযোগ দিলেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে মিড-অফে তার ক্যাচের সুযোগ হাতছাড়া করলেন শ্রীলঙ্কার বদলি ফিল্ডার শেহান আরাচ্চিগে। ব্যক্তিগত ৬০ রানে জীবন পেলেন তিনি।

১৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৯৪। ক্রিজে ৬২ বলে ৬১ রান করা তানজিদের সঙ্গী তাওহিদ হৃদয় খেলছেন ২৫ বলে ১৮ রানে।

দারুণ ব্যাটিংয়ে তানজিদের ফিফটি

কনকাশন বদলি হিসেবে পাওয়া সুযোগের পুরোটা কাজে লাগালেন তানজিদ হাসান তামিম। দারুণ খেলে ৫১ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করলেন তিনি। বাঁহাতি ওপেনারের ইনিংসে চার ৬টি ও ছক্কা ২টি।

১৫ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তানজিদের এটি দ্বিতীয় ফিফটি। আগের ফিফটিটি তিনি করেছিলেন গত বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে। তার ব্যাটে চড়ে রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে ভালো।

১৬ ওভারে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৭৮ রান। তানজিদ ৫২ বলে ৫০ ও তাওহিদ হৃদয় ১৭ বলে ১৩ রানে খেলছেন।

শান্তকেও থামালেন কুমারা 

এনামুল হক বিজয়ের পর নাজমুল হোসেন শান্তকেও আউট করলেন লাহিরু কুমারা। তার বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

৫ বলে ১ রান করে আউট হলেন শান্ত। ১১তম ওভারে দলীয় ৫৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

তানজিদের ব্যাটে ভালো শুরু, একাদশে সুযোগ পেয়ে ব্যর্থ বিজয়

এই ম্যাচে শুরুতে একাদশেই ছিলেন না তানজিদ হাসান তামিম। ফিল্ডিংয়ে সৌম্য সরকার মাথায় আঘাত পাওয়ায় তাকে কনকাশন বদলি নেয় বাংলাদেশ। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে এই তরুণ দেখাচ্ছেন ঝলক। দারুণ আগ্রাসী শুরু এনে দিয়েছেন তিনি।

আরেক প্রান্তে এনামুল হক বিজয় অবশ্য বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। নবম ওভারে লাহিরু কুমারার বলে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন ২২ বলে ১২ রান করে। ২৩৬ রান তাড়ায় ৫০ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। 

লিয়ানাগের সেঞ্চুরিতে লড়াইয়ের পুঁজি শ্রীলঙ্কার

দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরুতেই লঙ্কান দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দারুণ সূচনা এনে দেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। এরপর মিডল অর্ডারে ধাক্কা দেন আরেক পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। মেহেদী হাসান মিরাজও ঘূর্ণির জাদু দেখান। তাতে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নিতে থাকেন টাইগার বোলাররা।

তবে ধারার বিপরীতে দারুণ ব্যাটিংয়ে এক প্রান্ত আগলে রাখেন জেনিথ লিয়ানাগে। দায়িত্বশীল এক ইনিংস খেলে তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। তার এই সেঞ্চুরিতে ভর করেই ২৩৫ রানের লড়াকু পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা।

শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১০১ রানের ইনিংস খেলেন লিয়ানাগে। ১০২ বলের অসাধারণ ইনিংসটি সাজাতে ১১টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন লিয়ানাগে। আসালাঙ্কার ব্যাট থেকে আসে ৩৭ রান। নয় নম্বরে নেমে ১৫ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন মহেশ থিকশানা।

বাংলাদেশের হয়ে ৪২ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন তাসকিন। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি করে উইকেট পান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৩৫ (নিসাঙ্কা ১, আভিস্কা ৪, মেন্ডিস ২৯, সামারাবিক্রমা ১৪, আসালাঙ্কা ৩৭, লিয়ানাগে ১০১*, ওয়েলালাগে ১, হাসারাঙ্গা ১১, থিকশানা ১৫, মাদুশান ৩, কুমারা ১; শরিফুল ০/৫, তাসকিন ২/৪২, মোস্তাফিজ ২/৩৯, সৌম্য ১/১০, মিরাজ ২/৩৮, রিশাদ ১/৫১)।

থিকশানাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন সৌম্য

নিজের শেষ ওভারে বোলিং করতে এসে প্রথমেই ওয়াইড দেন মোস্তাফিজুর রহমান। তবে এরপরই চোটে পড়েন এই পেসার। তার জায়গায় বল হাতে নেন সৌম্য সরকার। এসেই ৬০ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। তার অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বলে ফ্লিক করতে যান মহেশ থিকশানা। তবে মিড উইকেটে অতিরিক্ত ফিল্ডার তানজিম হাসান সাকিবের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৪০ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলেন থিকশানা।

৪৮ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২১৮ রান। লিয়ানাগে ৮৭ এবং নতুন ব্যাটার প্রমোদ মাদুশান ১ রানে ব্যাট করছেন।

লিয়ানাগে-থিকশানার জুটিতে পঞ্চাশ

দলীয় ১৫৪ রানে সাত উইকেট হারালে লেজ বেড়িয়ে যায় শ্রীলঙ্কার। তখন মনে হয়েছিল দুইশ রান পার করা কঠিন হয়ে যাবে তাদের জন্য। তবে এরপর মহেশ থিকশানাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছেন জেনিথ লিয়ানাগে। দারুণ ব্যাটিংয়ে দলীয় দ্বিশতক পার করার পর নিজেদের জুটিতেও পার করেছেন পঞ্চাহসের কোটা। ২৭৫ বলে আসে দলের ডাবল সেঞ্চুরি। আর ৭০ বলে আসে জুটির ফিফটি।

৪৬ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২০৫ রান। লিয়ানাগে ৭৭ ও থিকশানা ১৪ রানে ব্যাটিং করছেন।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে লিয়ানাগের ফিফটি

এক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নিচ্ছে বাংলাদেশ। তবে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অপর প্রান্তটা আগলে রেখে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছেন জেনিথ লিয়ানাগে। এরমধ্যেই নিজের হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই ব্যাটার। ৬৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করেছেন তিনি।

৩৯ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৬৬ রান। লিয়ানাগে ৫০ এবং থিকশানা ৫ রানে ব্যাটিং করছেন।   

হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে মিরাজের দ্বিতীয় শিকার

উইকেটে নেমে কিছুটা হাত খুলে চেষ্টা করছিলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। মেহেদী হাসান মিরাজের আগের ওভারেই দারুণ একটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনি। তার পরের ওভারের প্রথম বলে পেছনের দিকে সরে স্কয়ার কাট করতে চেয়েছিলেন এই লঙ্কান। লাইন মিস করলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৮ বলে ১টি ছক্কায় ১১ রান করেন হাসারাঙ্গা।

৩৫ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৫৪ রান। লিয়ানাগে ৪৩ এবং নতুন ব্যাটার মহেশ থিকশানা ০ রানে ব্যাট করছেন।  

মিরাজের শিকার ওয়েলালাগে

উইকেটে নেমে শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ছিলেন দুনিথ ওয়েলালাগে। প্রথম ১৫ বলে তো কোনো রানও করতে পারেননি। অধৈর্য হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে স্লগ সুইপ করে ছক্কা হাঁকাতে চেয়েছিলেন এই লঙ্কান। তবে টাইমিংয়ে হেরেফের করে মিড উইকেটে ধরা পড়েন সৌম্য সরকারের হাতে। ১৮ বলে ১ রান করেন ওয়েলালাগে।

৩১ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩৬ রান। লিয়ানাগে ৩৬ এবং নতুন ব্যাটার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ০ রানে ব্যাটিং করছেন।

আসালাঙ্কাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মোস্তাফিজ

৭৪ রানে চার উইকেট হারানোর পর জেনিথ লিয়ানাগেকে নিয়ে দলের হাল ধরেছিলেন চারিথ আসালাঙ্কা। ৪৭ রানের জুটি গড়ে ইনিংস মেরামতও করার চেষ্টা করেন। তবে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে আসালাঙ্কাকে ফিরিয়ে এই জুটি ভেঙেছেন মোস্তাফিজ।

তার অফস্টাম্পের বাইরে রাখা লেন্থ বলে কাট করতে চেয়েছিলেন আসালাঙ্কা। কিন্তু ব্যাটের বাইরের দিকের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে। ৪৬ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩৭ রান করেন আসালাঙ্কা।

২৫ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১১৭ রান। লিয়ানাগে ১৯ ও নতুন ব্যাটার দুনিথ ওয়ালালাগে ০ রানে ব্যাট করছেন।  

শ্রীলঙ্কার দলীয় শতরান

নিয়মিত উইকেট তুলে শুরু থেকেই লঙ্কানদের স্বস্তি দেয়নি বাংলাদেশ। জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়তে গেলেও পেয়েছে ব্রেকথ্রু। তবে এরমধ্যেই দলীয় শতক তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দলীয় শতরান পেতে ১৩৭ বল লেগেছে তাদের।

২৩ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১০৪ রান। আসালাঙ্কা ৩১ ও লিয়ানাগে ১২ রানে ব্যাটিং করছেন।    

দ্বিতীয় রিভিউও হারাল বাংলাদেশ

প্রথম রিভিউ হারিয়েছিল আগেই। এবার দ্বিতীয় রিভিউও হারাল বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের লেন্থ ডেলিভারি এক্রস দ্য লাইন খেলতে চেয়েছিলেন জেনিথ লিয়ানাগে। তবে ব্যাটের কানায় লেগে প্যাডে লাগে। আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিপ্লেতে ইনসাইড এজ পরিষ্কার বোঝা গেলে দ্বিতীয় রিভিউও হারায় বাংলাদেশ।

১৯ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৮১ রান। আসালাঙ্কা ২১ ও লিয়ানাগে ২ রানে ব্যাটিং করছেন।   

মেন্ডিসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন রিশাদ

প্রথমবারের মতো চলতি সিরিজে সুযোগ পেলেন রিশাদ হোসেন। আর বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই পেলেন উইকেট। তাও সেট ব্যাটার লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে পেলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট। ভাঙে ৩৩ রানের জুটি।

রিশাদের লেন্থ ডেলিভারিটি খুব সামান্যই বাঁক নেয়। কিছুটা অলস ঢঙ্গে ব্যাট চালান লঙ্কান অধিনায়ক। ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে। ৫১ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ২৯ রান করেন মেন্ডিস।

১৮ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৮০ রান। আসালাঙ্কা ২১ ও নতুন ব্যাটার জেনিথ লিয়ানাগে ১ রানে ব্যাটিং করছেন।   

সামারাবিক্রমাকে ফেরালেন মোস্তাফিজ

আগের দুই ম্যাচে একাদশে ছিলেন না। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ফিরে বোলিংয়ে শেষে দ্বিতীয় বলেই উইকেটের দেখা পেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ফেরালেন সাদিয়া সামারাবিক্রমাকে। স্টাম্পে রাখা তার লেন্থ বল সিমে পড়ে কিছুটা লাফিয়ে ওঠে। তাতেই পরাস্ত হন এই ব্যাটার। ব্যাটের কানায় ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে গেলে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। ১৫ বলে ২টি চারের সাহায্যে ১৪ রান করেন সামারাবিক্রমা।

১১ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪৩ রান। কুশল মেন্ডিস ২১ ও চারিথ আসালাঙ্কা ১ রানে ব্যাটিং করছেন।   

রিভিউ নষ্ট করল বাংলাদেশ

শরিফুল ইসলামের অফস্টাম্পের বেশ বাইরে রাখা বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। তবে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে অল্পের জন্য কানায় লাগেনি। তাতে রিভিউ নিয়েছিল বাংলাদেশ। আল্ট্রা-এজেও কিছু ধরা না পড়লে রিভিউ হারায় টাইগাররা।

৭ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ২ রান। কুশল মেন্ডিস ১৬ ও সামারাবিক্রমা ২ রানে ব্যাটিং করছেন।  

নিসাঙ্কার পর আভিস্কাকেও ফেরালেন তাসকিন

দুর্দান্ত বোলিং করছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। পাথুম নিসাঙ্কার পর আভিস্কা ফার্নান্ডোকেও ফেরালেন এই পেসার। তার কিছুটা খাটো লেন্থের বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন আভিস্কা। তবে ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হতে। ৬ বলে ৪ রান করেন আভিস্কা।

৪ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৫ রান। কুশল মেন্ডিস ৯ ও সাদিরা সামারাবিক্রমা ০ রানে ব্যাটিং করছেন।  

শুরুতেই নিসাঙ্কাকে ফেরালেন তাসকিন

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই লঙ্কান পাথুম নিসাঙ্কাকে ফিরিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। একাধিকবার আউটসাইড এজ হওয়া এই ব্যাটারকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এই পেসার। তার ফুললেন্থের বলে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে গেলে প্যাডে লাগে বল। আবেদনে সাড়া দেন মাঠের আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিলে বাঁচতে পারতেন তিনি। কারণ রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে লেগ স্টাম্প মিস করতো বল। ৮ বলে ১ রান করেছেন নিসাঙ্কা।

২ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ২ রান। আভিস্কা ফার্নান্ডো ০ ও অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ১ রানে ব্যাটিং করছেন।

লঙ্কান একাদশে এক পরিবর্তন

বাংলাদেশের মতো একটি পরিবর্তন অনুমিত ছিল শ্রীলঙ্কা দলেও। কারণ চোটে পড়েছিলেন দিলশান মাদুশাঙ্কা। তার পরিবর্তে একজন স্পিনারকে এনেছে দলটি। সুযোগ পেয়েছেন দ্বিতীয় ম্যাচে বাদ পড়া মহেশ থিকশানা।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: পাথুম নিসাঙ্কা, আভিষ্কা ফার্নান্ডো, কুসল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, জেনিথ লিয়ানাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুনিথ ওয়ালালাগে, মহেশ থিকসানা, প্রমোদ মদুশান ও লাহিরু কুমারা।

বাংলাদেশের একাদশে তিন পরিবর্তন

বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন রয়েছে তিনটি। লিটন দাসের জায়গায় ওপেনার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়। অন্যদিকে চোটে তানজিম হাসান সাকিবের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া তাইজুল ইসলামকে বাদ দিয়ে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে দলভুক্ত করেছে টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট।

তবে লিটন থেকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়ায় এবং তানজিম ইনজুরিতে পড়ায় এ দুই পরিবর্তন অনুমিত ছিলই। অনুমিত ছিল তাইজুলের পরিবর্তনও। কারণ শেষ দুই ম্যাচে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি তিনি। মূলত এই কারণেই শেষ ম্যাচে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ: সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।

টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

আগের দুই ম্যাচের মতো সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচেও টস জিতে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। আর টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছেন শ্রীলঙ্কান দলের অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। অর্থাৎ আগে ফিল্ডিং করবে বাংলাদেশ দল। আজ সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায়।

অলিখিত ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির মতো ওয়ানডে সিরিজেও শেষ ম্যাচে হতে যাচ্ছে সিরিজের নিষ্পত্তি। আগের দুই ম্যাচে একটি করে জয় দুই দলেরই। ফলে শেষ ম্যাচ পরিণত হয়েছে অলিখিত ফাইনালে। আর এ ফাইনাল জিততে মরিয়া দুই দলই।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগের দুই ম্যাচে শিশির বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ালেও এদিন তেমন কিছু থাকছে না। কারণ শেষ ম্যাচটি দিবারাত্রির নয়। তবে এই ম্যাচের আগে দুঃসংবাদ দুই দলেই। শ্রীলঙ্কার পেসার দিলশান মাদুশঙ্কার সঙ্গে ছিটকে গেছেন বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসান সাকিবও।  

Comments