ইউটিউবের বিকল্প ১০ সাইট

সম্প্রতি ইউটিউব প্রিমিয়াম বাজারে আসার পর ফ্রি সংস্করণে বিজ্ঞাপনের অত্যাচার অতি মাত্রায় বেড়ে গেছে। কিছু বিজ্ঞাপন আগের মতো স্কিপও করা যায় না। এ লেখায় ইউটিউবের ১০ বিকল্প সাইট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ইউটিউবের ১০ বিকল্প। ছবি: সংগৃহীত
ইউটিউবের ১০ বিকল্প। ছবি: সংগৃহীত

ইউটিউব বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সেরা ভিডিও সাইটগুলোর মধ্যে একটি। দীর্ঘদিন পর্যন্ত এটাই ছিল ওয়েবে মানুষের ভিডিও দেখার একমাত্র জনপ্রিয় মাধ্যম। তবে ইউটিউবেরও কিছু চমৎকার বিকল্প ভিডিও সাইট রয়েছে।

সম্প্রতি ইউটিউব প্রিমিয়াম বাজারে আসার পর ফ্রি সংস্করণে বিজ্ঞাপনের অত্যাচার অতি মাত্রায় বেড়ে গেছে। কিছু বিজ্ঞাপন আগের মতো স্কিপও করা যায় না। এ লেখায় ইউটিউবের ১০ বিকল্প সাইট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

১। ভিমিও (Vimeo)

ভিমিও। ছবি: সংগৃহীত
ভিমিও। ছবি: সংগৃহীত

ভিমিও সবচেয়ে প্রথম হাই-ডেফিনিশন ভিডিও নিয়ে আসে। ব্যবহারকারীরা চাইলে তাদের নিজস্ব ভিডিওগুলো এখানে আপলোড করতে পারেন। তবে ভিমিও এখনও হাই-ডেফিনিশন কন্টেন্টের উপরই বেশি জোর দিয়ে থাকে।

ভিমিও প্ল্যাটফর্মে ৩৬০ ডিগ্রি ভিডিও আপলোড সুবিধার পাশাপাশি দেখার জন্যে কিছু টেলিভিশন সিরিজও পাওয়া যায়।

লিংক: https://vimeo.com/

২। ডেইলিমোশন (Dailymotion)

ডেইলিমোশন। ছবি: সংগৃহীত
ডেইলিমোশন। ছবি: সংগৃহীত

ইউটিউব চালুর মাত্র এক মাস পরেই ডেইলিমোশন অনলাইনে আসে। সিএসআই ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ইউটিউবের সবচেয়ে কাছের প্রতিযোগী হচ্ছে ডেইলিমোশন।

ডেইলিমোশনে আপলোড করা লাখো ভিডিও রয়েছে, যা বিনামূল্যে উপভোগ করা যায়৷ এই ভিডিও সাইটের ইন্টারফেস ও ব্যবহারের অভিজ্ঞতা অনেকটা ইউটিউবের মতোই।

লিংক: https://www.dailymotion.com/

৩। প্লেইয়ার (Playeur)

প্লেইয়ার। ছবি: সংগৃহীত
প্লেইয়ার। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্মের জগতে প্লেইয়ার অপেক্ষাকৃত নতুন একটি সাইট। আগে এর নাম ছিল ইউট্রিওন, যা ২০১৯ সালের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়।

অন্যান্য ভিডিও সাইটের তুলনায় এটি কিছুটা আলাদা, কারণ এই প্ল্যাটফর্মে ভিডিও আপলোডের নীতিমালা তুলনামূলকভাবে শিথিল। বিশেষত, ইউটিউবের তুলনায় এর বিধিনিষেধ অনেক কম। তবে তার অর্থ এই নয় যে যা খুশী তাই আপলোড করতে পারবেন!

আপনি চাইলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওগুলো আপনার প্লেইয়ার প্রোফাইলে ইমপোর্ট করে নিয়ে আসতে পারবেন; আবার নতুন করে আপলোডের প্রয়োজন ছাড়াই। এটি ইউটিউবের একটি এক্সটেনশনের মতো কাজ করে।

লিংক: https://playeur.com/

৪। দ্য ইন্টারনেট আর্কাইভ (The Internet Archive)

ইন্টারনেট আর্কাইভ। ছবি: সংগৃহীত
ইন্টারনেট আর্কাইভ। ছবি: সংগৃহীত

দ্য ইন্টারনেট আর্কাইভ একটি ওয়েব ভিত্তিক লাইব্রেরি৷ যেখানে আপনি বই, মিউজিক, সফটওয়্যার ও সিনেমা থেকে শুরু করে সব ধরণের কনটেন্ট বিনামূল্যে পাবেন।

ইন্টারনেট আর্কাইভে আপনি প্রচুর ঐতিহাসিক ভিডিও কন্টেন্ট পাবেন। যদিও এখানে নতুন কনটেন্টও পাওয়া যায়, কিন্তু এর সবচেয়ে সেরা দিক হলো পুরানো ভিডিওগুলো।

যেগুলোর মধ্যে আপনি বিভিন্ন ঐতিহাসিক সংবাদ প্রতিবেদন, টিভি সিরিজ ও চলচ্চিত্রও খুঁজে পাবেন। যা সাধারণত অন্যান্য সাইটগুলোয় খুঁজে পাওয়া কঠিন।

লিংক: https://archive.org/

৫। টুইচ (Twitch)

টুইচ। ছবি: সংগৃহীত
টুইচ। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে অনলাইনের অন্যতম সেরা লাইভ-স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে টুইচ। এখানে ১৪ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে লাখো ভিডিও স্ট্রীমার। টুইচ প্ল্যাটফর্মে প্রায় যেকোনো বিষয়ের উপরই আপনি লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারবেন।

শুরুতে মূলত গেমাররা এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করলেও এখন প্রায় সব ধরনের বিষয়ের ওপরই লাইভ স্ট্রিম কনটেন্ট পাওয়া যায় টুইচে।

লিংক: https://m.twitch.tv/

৬। দ্য ওপেন ভিডিও প্রজেক্ট

ওপেন ভিডিও। ছবি: সংগৃহীত
ওপেন ভিডিও। ছবি: সংগৃহীত

দ্য ওপেন ভিডিও প্রজেক্ট মূলত গবেষকদের জন্যে তৈরী। বিশেষ করে যারা মাল্টিমিডিয়া ও ডিজিটাল লাইব্রেরি নিয়ে কাজ করেন তাদের কথা মাথায় রেখে এটি চালু করা হয়।

যার ফলে দ্য ওপেন ভিডিও প্রজেক্টের বেশিরভাগ ভিডিওই শিক্ষামূলক। এখানে এমনকি, নাসার আর্কাইভ থেকেও অনেক ভিডিও এবং ৫০ এর দশকের ক্লাসিক টিভি বিজ্ঞাপন ও শিক্ষামূলক চলচ্চিত্রের সংগ্রহও রয়েছে। আপনি যদি ঐতিহাসিক ভিডিও কনটেন্ট নিয়ে গবেষণা করতে চান, তাহলে দ্য ওপেন ভিডিও প্রজেক্ট আপনার কাজে আসবে।

লিংক: https://open-video.org/

৭। ৯গ্যাগ (9GAG)

৯গ্যাগ। ছবি: সংগৃহীত
৯গ্যাগ। ছবি: সংগৃহীত

মজাদার সব কন্টেন্টের বিশাল এক সংগ্রহ নিয়ে তৈরি নাইনগ্যাগ বা ৯গ্যাগ। যেখানে বিভিন্ন হাসির ভিডিও, মিম, অ্যানিমে, পপ কালচারের মত বিষয়গুলোর উপরে বিভিন্ন বিনোদনমূলক কনটেন্ট রয়েছে। আপনি যদি মজার কিছু ভিডিও কনটেন্ট দেখে সময় পার করতে চান তাহলে ৯গ্যাগ হতে পারে একটি ভালো জায়গা।

তবে টিভি সিরিজ বা মুভির স্পয়লার প্রচার নিয়ে দুর্নাম রয়েছে এই সাইটের। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ৯গ্যাগ ব্যবহার করা উচিৎ।

লিংক: https://9gag.com/

৮। টেড টকস (TED)

টেড টকস। ছবি: সংগৃহীত
টেড টকস। ছবি: সংগৃহীত

টেড টকস কে প্রথাগত ভিডিও সাইট বলা যায় না। তবে এতে প্রযুক্তি, বাণিজ্য, স্থাপথ্য, বিজ্ঞান ও বৈশ্বিক সমস্যার মতো বিভিন্ন বিষয়ে ৩ হাজার ৫০০ টিরও বেশি আলোচনা এবং বক্তৃতা পাবেন। এছাড়া টেড টকস প্রতি সপ্তাহেই পাঁচ থেকে সাতটি নতুন আলোচনা আপলোড করে। আপনার দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সমস্যা থেকে শুরু করে বিচিত্র এবং বিবিধ বিষয়ে আলোচনা এখানে পাবেন। যার বেশিরভাগই বেশ শিক্ষামূলক।

লিংক: https://www.ted.com/talks

৯। ডিটিউব (DTube)

ডিটিউব। ছবি: সংগৃহীত
ডিটিউব। ছবি: সংগৃহীত

ডিটিউব-এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ডিসেন্ট্রালাইজড টিউব। এটি ইউটিউবের মতোই একটি ভিডিও সাইট। তবে এর ভিডিওগুলো কোনো একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রীয় সার্ভার থেকে হোস্ট করা হয়না। পরিবর্তে পুরো সাইটটি ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। ব্যবহারকারীরা এখানে ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি উপার্জন করতে পারেন।

তবে বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। 

লিংক: https://d.tube/

১০। ফেসবুক ওয়াচ (Facebook Watch)

ফেসবুক ওয়াচ। ছবি: সংগৃহীত
ফেসবুক ওয়াচ। ছবি: সংগৃহীত

ইউটিউবের মতোই ফেসবুক ওয়াচেও আপনি এখন আপনার পছন্দের সব ভিডিও দেখতে পারেন। ফেসবুক ওয়াচে টিভি সিরিজের পাশাপাশি নানা বিষয়ের ওপর হাজারো ভিডিও ক্লিপস দেখতে পাবেন। তবে ইউটিউবের তুলনায় এখানে কনটেন্ট খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন। ছোট দৈর্ঘ্যের ভিডিওর জন্য সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফেসবুক রিলস।

এতে কোন সন্দেহ নেই যে, ভিডিওর জন্যে ইউটিউব একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, অনলাইনে ভিডিও দেখার জন্যে ইউটিউবই আপনার জন্যে একমাত্র জায়গা। তাই আপনার ভিডিও দেখার অবসরে নতুন ধরনের ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতা যুক্ত করতে উপরের বিকল্পগুলোও ঘুরে দেখতে পারেন। কারণ বৈচিত্র বেশিরভাগ সময়ই মজার অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে।

লিংক: https://www.facebook.com/watch/

গ্রন্থনা: আহমেদ বিন কাদের অনি

তথ্যসূত্র: এমইউও

 

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

17h ago