শীতে শিশুর যত্ন

ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য ও শিশু কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শিরীন আফরোজ বলেন, 'শীতকালে ফ্লুয়ের প্রবণতা বেড়ে যায়। বাইরে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শরীর তাপ হারাতে থাকে।’
ছবি: সাজ্জাদ ইবনে সাঈদ

শীত দোরগোড়ায়। আবহাওয়া বদল হলে শিশুর অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। শীতে শিশুদের অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তাই তাদের জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্ন।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য ও শিশু কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শিরীন আফরোজ বলেন, 'শীতকালে ফ্লুয়ের প্রবণতা বেড়ে যায়। বাইরে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শরীর তাপ হারাতে থাকে। এর ফলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।'

শীতে বাড়ির ছোট সোনামণির যত্ন কীভাবে নিতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মাথা ও বুক ঢেকে রাখলে তা শিশুকে উষ্ণ থাকতে সহায়তা করে। এর জন্য নিশ্চিত করতে হবে যেন শিশুর গায়ের তাপমাত্রা খুব বেশি না কমে যায়।

শীতে শিশুর পোশাকে বিশেষ নজর দিতে হবে। কারণ এই সময়ে ধুলোবালি বেশি থাকায় তা শিশুর পোশাকে আটকে থাকে, বিশেষ করে উলের তৈরি পোশাকে। এর থেকে হতে পারে 'ডাস্ট এলার্জি'। তাই নিয়মিত গরম পানি দিয়ে পোশাক পরিষ্কার করা জরুরি।

শিশুরা খেলাধুলায় যত সক্রিয় থাকবে, ততই তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। তাই শিশুকে খেলাধুলার সুযোগ করে দিতে হবে। রোদের আলো পড়ে এমন জায়গায় খেলার ব্যবস্থা করে দিলে শিশুর শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি যেমন পূরণ হবে, তেমনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।

টেক্সাসের একদল শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের গবেষণায় দেখা যায়, সূর্যের আলোর ওপর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্ভর করে। শীতে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো না পেলে শিশুদের অসুস্থতার হার বেড়ে যায়।

শিশুদের এই সময়ে ঠাণ্ডা খাবার খেতে না দেওয়াই ভালো। ফ্রিজের খাবার দিতে হলে ভালোভাবে গরম করে দেওয়া উচিত।

শীতে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় তরল জাতীয় খাবার বেশি করে দেওয়া উচিত। দিনে অন্তত একবার কুসুম গরম দুধ, পানি, স্যুপ জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। এতে শিশুর ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার উপশম হবে। পাশাপাশি শিশুকে দিতে হবে মৌসুমি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল।

অনেক বাবা-মা শীতে শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে চান না। তাদের ধারণা, প্রতিদিন গোসল করালে শিশুর ঠাণ্ডা লেগে যাবে। এটি একটি ভুল ধারণা। শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

এ ছাড়া, বয়স অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঘুমও নিশ্চিত করতে হবে। একজন নবজাতক ১৪-১৬ ঘণ্টা, ৬ মাস থেকে ১ বছর বয়সী শিশু ১৪-১৫ ঘণ্টা এবং ২ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু ১২-১০ ঘণ্টা ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিশুদের ত্বক কোমল থাকে। তাই ত্বকের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় শিশুর ত্বক আরও সেনসিটিভ হয়ে উঠে। অনেকেই শিশুর ত্বকে তেল ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে গায়ে আরও বেশি ময়লা আটকানোর সম্ভাবনা থাকে। এ সময় ভিটামিন ই সমৃদ্ধ লোশন ব্যবহার করাই ভালো হবে।

শীতে রোগ বালাইয়ের সংক্রমণ বেড়ে যায়। অতিরিক্ত জনসমাগমপূর্ণ খেলার জায়গা বা আবদ্ধ খেলার জায়গা, যেখানে অনেক শিশু খেলতে আসে, সেখানে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। সেক্ষেত্রে পাবলিক প্লেস এড়িয়ে যাওয়া ভালো।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago