চেহারার আকৃতি অনুযায়ী সঠিক কনট্যুরিংয়ের জন্য যা জানা প্রয়োজন

অনেকের ধারণা, কনট্যুরিং মানেই গাল চিকন করা, নাক সরু করা, থুতনি ও চোয়াল ফুটিয়ে তোলা। আসলে মোটেই তা নয়।
চেহারা আকৃতি অনুযায়ী কনট্যুরিং
ছবি: সংগৃহীত

চেহারার কাঠামোকে আরও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য জনপ্রিয় মেকআপ কৌশল হলো ফেস কনট্যুরিং। মেকআপের শেড ব্যবহার করে যেকোনো আকৃতির চেহারাকে ওভাল বা মানানসই আকৃতিতে রূপান্তর করাকেই মূলত কনট্যুর করা বলা হয়ে থাকে।

 

কনট্যুরিং কেন করা হয়

অনেকের ধারণা, কনট্যুরিং মানেই গাল চিকন করা, নাক সরু করা, থুতনি ও চোয়াল ফুটিয়ে তোলা। আসলে মোটেই তা নয়। কনট্যুরিংয়ের কাজ মূলত চেহারায় আলো–ছায়া ফেলার মতো। বেমানান প্রকট অংশকে গাঢ় শেডে ঢেকে সুন্দর অংশকে আলোয় বের করে আনার কাজ এটি। এটি মূলত চেহারার কাঠামোকে ফুটিয়ে তোলা, মুখের অবয়বকে শার্প লুক দেওয়া।

এই টেকনিকটি বর্তমানে অনেক মানুষের প্রতিদিনের মেকআপ রুটিনের একটি অংশ। চেহারা সঠিকভাবে কনট্যুর করার কিছু নিয়ম আছে। নিয়মানুযায়ী কনট্যুর না করলে হিতে বিপরীত হয়। তাই কোন আকৃতির চেহারায় কেমন কনট্যুর করতে হবে তা জানা খুবই জরুরি। 

সাধারণত কনট্যুর করতে হয় কপাল, চিক বোন, জ-লাইন এবং নাক। মুখে ময়েশ্চারাইজার, প্রাইমার, ফাউন্ডেশন এগুলো লাগানোর পর কনট্যুর অংশটি আসে। ক্রিম এবং পাউডার দুই ধরনের প্রোডাক্ট দিয়েই কাজটি করা যায়। যারা নতুন, তাদের জন্য সহজ হলো পাউডার কনট্যুর করা। সাধারণত পেশাদার আর্টিস্টরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রিম কনট্যুর করে থাকেন।  

কনট্যুর করতে যা যা প্রয়োজন

কনট্যুর করতে একটি সঠিক ব্রাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কনট্যুর ব্রাশ ছাড়া অন্য কোনো ব্রাশ ব্যবহার করলে কোনোভাবেই প্রোডাক্ট ত্বকের সঙ্গে নিখুঁতভাবে মিশবে না। আর প্রয়োজন হবে ডার্ক চকলেট বা ব্রাউন বা ব্রোঞ্জ কালারের শেড, যা দিয়ে কনট্যুর করা হবে। নিজের ত্বকের শেড থেকে দুই বা তিন শেড গাঢ় শেড বেছে নিতে হবে। বাজারে এখন ত্বক অনুযায়ী অনেক ভালো মানের কনট্যুর প্রোডাক্ট কিনতে পাওয়া যায়।

কনট্যুর করবেন যেভাবে

আগেই বলা হয়েছে, কনট্যুরিংয়ে যারা নতুন তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো পাউডার প্রোডাক্ট দিয়ে কনট্যুর করা। এক্ষেত্রে শুধু তিনটি জায়গা কনট্যুর করতে পারেন। এটা সব ধরনের চেহারার জন্য সাধারণ নিয়ম।

  • হেয়ার লাইন থেকে কন্টুর করে তা আলতোভাবে ডাস্ট করে টেমপল থেকে কপালের মাঝখানের প্রায় ১/৩ অংশ পর্যন্ত প্রোডাক্ট সুন্দর করে ব্লেন্ড করে নিন।
  • আপনার হেয়ারলাইনের চারপাশের কনট্যুর সমানভাবে ব্লেন্ড হয়ে গেলে চিক হলোর দিকে নিচের দিকে যান। তারপর ব্রাশটি ঘুরিয়ে দিন এবং এটিকে ফেস সেন্টার থেকে দূরে রাখুন। চিক বোন বরাবর কনট্যুর ব্লেন্ড করার পরে কানের পেছন থেকে চিন পয়েন্ট পর্যন্ত জ এর ঠিক নিচে কনট্যুর করে শেষ করুন।
  • এবার নাক কনট্যুর করুন। নাকে মাঝ বরাবর হাইলাইট করে দুপাশে কনট্যুরের দুটি লাইন করুন এবং মসৃণ হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। এতে নাকটা দেখতে সরু মনে হবে।

চেহারার আকৃতি অনুযায়ী কনট্যুরিং

প্রথমেই চেহারার আকৃতি কোন ধরনের তা বুঝে নিতে হবে। সেটি বুঝতে চুলগুলো একদম পেছনে টেনে নিয়ে পনিটেল করে আয়নার সামনে দাঁড়ান। চেহারা অনুযায়ী আয়নায় একটি আউটলাইন এঁকে নিন। এর সঙ্গে তুলনা করলেই চেহারা আকৃতি বোঝা যাবে।

ওভাল শেপ

আপনার চেহারা যদি ওভাল শেপ বা ডিম্বাকৃতির হয়ে থাকে তাহলে কনট্যুর করতে হবে হেয়ারলাইন থেকে। জ লাইনও করতে হবে। সঙ্গে কনট্যুর করতে হবে নাকটাও।

লং শেপ

ফেসের শেপ যদি লং বা লম্বা হয়ে থাকে তবে হেয়ার লাইন, টেম্পল এবং চিনের নিচে কনট্যুর করতে হবে। নাকে হালকা করে কনট্যুর করে নেওয়া যেতে পারে। এতে করে চেহারা দেখতে কিছুটা গোলাকৃতির হবে।

রাউন্ড শেপ

রাউন্ড শেপ বো গোলাকৃতির চেহারায় এমনভাবে কনট্যুরিং করতে হবে যাতে একটা শার্প ভাব ফুটে ওঠে। এজন্য কনট্যুর করতে হবে টেম্পল অর্থাৎ কপালের এক পাশ থেকে, তারপর করতে হবে চিকবোনের নিচে। আর ডাবল চিন থাকলে সেখানটায় হালকা কনট্যুর করে নিতে হবে। আর সঙ্গে নাকও অবশ্যই কনট্যুর করতে হবে।

স্কয়ার শেপ

স্কয়ার শেপ বা চারকোণা আকৃতির চেহারায় কনট্যুর করে একটা ত্রিভুজ ভাব ফুটিয়ে তুলতে পারলে দেখতে ভালো লাগে। তাই স্কয়ার শেপ ফেসে কনট্যুরিং করতে হবে হেয়ার লাইনের দুই কোণায় এবং জ লাইনের কোণায়। নাকেও কনট্যুর করতে হবে।

হার্ট শেপ

যাদের চেহারার আকৃতি হার্ট শেপের বা হৃদয়াকৃতির, তারা কনট্যুর করবেন টেম্পল এবং চিনের একদম মাঝ বরাবর।

ডায়মন্ড শেপ

চেহারা যদি ডায়মন্ড আকৃতির হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কনট্যুর করতে হবে কপালের মাঝ থেকে হেয়ার লাইনের দিকে আর চিনে। নাকটাও হালকা কনট্যুর করে নিতে হবে।

ওপরের নিয়মগুলো মেনে কন্টুর করলে চেহারার আকৃতি আরও সুন্দরবাবে উপস্থাপন করা সম্ভব। তবে সেক্ষেত্রে কনট্যুরের পাশাপাশি নিয়ম মেনে হাইলাইট করার কথা ভোলা যাবে না।

 

Comments