মুম্বাইয়ের যেসব রেস্তোরাঁয় বসে বলিউড তারকাদের মিলনমেলা

এসব রেস্তোরাঁয় নিত্য আনাগোনা বলিউড তারকাদের।
রেস্টুরেন্ট
অলিভ বার অ্যান্ড কিচেন। ছবি: সংগৃহীত

সাপনো কা শেহের মুম্বাই অর্থাৎ স্বপ্নের শহর মুম্বাই। আপনি যদি বলিউডের পোকা হয়ে থাকেন, তাহলে বহু সিনেমাতে বলা এই সংলাপের সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই।

স্বপ্নকে পুঁজি করে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে অনেকেই আসেন এই শহরে রুটিরুজির আশায়। আর এদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে তারকা হয়ে উঠার। আকাশের নয়, বলিউডের। এর মধ্যে খুব কম মানুষই সে স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। আর যারা পারেন, তাদের আলোকচ্ছটায় ভক্তরা প্রতিনিয়ত যেন আরও বেশি মুগ্ধ হন। এই তারকাদের জীবনযাত্রা নিয়ে ভক্ত কিংবা গণমাধ্যমের আগ্রহ ও উৎসাহের কোনো কমতি নেই। তারা কোথায় যান, কী খান, কীভাবে কাটান অবসর সময়? এসব প্রশ্নের কিছু উত্তর মিলতে পারে আজকের এই তালিকাটি থেকে, যেখানে রাখা হয়েছে মুম্বাইয়ের এমন কয়েকটি রেস্তোরাঁ, যেখানে প্রায়ই বসে বলিউড তারকাদের মিলনমেলা।

অলিভ বার অ্যান্ড কিচেন

বলিউডের কিং খান থেকে শুরু করে পতৌদিপুত্র, মুম্বাইয়ের এই রেস্তোরাঁটিতে নিত্য আনাগোনা বলিউড তারকাদের। আর সেজন্যই তো এখানকার নীল দরজার এক পাশে জমাট বেঁধে থাকে পাপারাজ্জির দল। যদি এক ঝলক দেখা মেলে তারকাদের আর ক্যামেরায় নিয়ে নেওয়া যায় আরেকটা গোপন ক্লিক ! হবে নাই বা কেন, বলিউড স্টারদের অপ্রস্তুত অবস্থার ছবি গণমাধ্যমে যত ভাইরাল হয়, তার পেছনে তো এই পাপারাজ্জিদেরই সবচেয়ে বড় ভূমিকা।

বলিউড
অলিভ বার অ্যান্ড কিচেন। ছবি: সংগৃহীত

এই সাদা রঙের আভিজাত্যে ঘেরা ভূমধ্যসাগরীয় বারটিই আদতে মুম্বাইয়ের 'নাইট লাইফ' শুরু করার পেছনে ভূমিকা রেখেছিল। এর মোমবাতির আলোকসজ্জা, সপ্তাহান্তে বৃহস্পতিবারের বার নাইট এবং সুস্বাদু সব খাবারের জন্যই হয়তো সারা আলি খান, প্রিয়াংকা চোপড়া ও জো জোনাসের মতো তারকারা এর প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। এখানকার পিজ্জাগুলোতে থাকা থিন ক্রাস্ট, সসি পাস্তা কিংবা এস্পেটাডাস আর ট্যাপা স্টাইলের অ্যাপেটাইজারগুলোও এখানে বারবার আসতে বাধ্য করে।

বাস্তিয়ান

যে রেস্তোরাঁর মালিকানাই খোদ বলিউডের হাতে, এতে বলিউডের মানুষজনের আসা-যাওয়া অনেক বেশি হবে এতে কি আর সন্দেহ আছে? শিল্পা শেঠির স্বত্বাধিকারে থাকা পশ্চিম বান্দ্রায় অবস্থিত বাস্তিয়ান মুম্বাইয়ের অগ্রগণ্য রেস্তোরাঁগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান জায়গা জুড়ে রয়েছে।

রেস্টুরেন্ট
বাস্তিয়ান। ছবি: সংগৃহীত

এতে সবসময়ই দেখা যায় বলিউডের লাইমলাইটে থাকা অভিনেতা-অভিনেত্রী কিংবা নির্মাতাদের। এই তালিকায় নাম রয়েছে করন জোহর, অনন্যা পান্ডে, জাহ্নবী কাপুরদের। এ ছাড়া অনিল কাপুরকন্যা সোনম কাপুরের একটু বেশিই প্রিয় বাস্তিয়ান। হবে নাই বা কেন?

দারুণভাবে রান্না করা সামুদ্রিক মাছের জন্য বিখ্যাত এই রেস্তোরাঁ। দুর্দান্ত সব ককটেলের সঙ্গে সুস্বাদু লবস্টার রোল কিংবা জনপ্রিয় স্যামন খেতে চাইলে এই মহাসমারোহের তুলনা মেলা ভার। তাই এখানে খাবার ও পরিবেশের চাকচিক্যের সঙ্গে যোগ দেয় বলিউডের জাঁকজমক।

হাক্কাসান

মুম্বাইয়ের সবচেয়ে বড় ডাইনিং ডেস্টিনেশনগুলোর মধ্যে অন্যতম হাক্কাসান নামের চাইনিজ রেস্তোরাঁ। এখানেই দেখা মিলবে হিন্দি চলচ্চিত্রের জগতের রথী-মহারথীদের।

মুম্বাই
হাক্কাসান। ছবি: সংগৃহীত

এই মিশেলিন-স্টার রেস্তোরাঁয় হরহামেশাই সাক্ষাৎ হয়ে যেতে পারে আদিত্য চোপড়া কিংবা কাপুর বোনেদের সঙ্গে কিংবা শিল্পা শেঠী, একতা কাপুর, রণবীর কাপুর, করন জোহর বা ক্যাটরিনা কাইফের মতো বলিউড তারকার সঙ্গে। এই রেস্তোরাঁর আবহ এতটাই উপভোগ্য যে কিছুটা ভালো সময় কাটাতে এখানেই চলে আসেন এই জনপ্রিয় ব্যক্তিরা।

পৃথ্বী ক্যাফে

জুহুতে অবস্থিত এই মাইলফলক ক্যাফে ও থিয়েটারটি শুরু করেছিলেন পৃথ্বীরাজ কাপুর। সিনেমহল কিংবা থিয়েটার পাড়া, সবখানের তারকাদের জন্যই আড্ডার জনপ্রিয় আস্তানা এই জায়গাটি। প্রতিভাবান অভিনেত্রী কাল্কি কেক্লা, হার্টথ্রব রণবীর কাপুর বলুন বা প্রাজ্ঞ অভিনেতা অনুপম খের বা ইলা অরুণ– সবারই ভালো লাগার ঘুরতে আসার স্থান এই পৃথ্বী ক্যাফে।

ক্যাফে
পৃথ্বী ক্যাফে। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাইয়ের স্পেশাল পাও ভাজির বিশেষ আইটেম পাও ভাজি ফন্ডু বা প্যান-ফ্রায়েড চিকেন– স্বাদকোরকে ঝড় তুলতে কী নেই এখানে? হাজারো মরিচবাতির সন্ধ্যায় এক সুন্দর-স্বর্ণালী সময় কাটাতে আর হুটহাট কোনো তারকার দেখা পেতে চাইলে মুম্বাইয়ের এই থিয়েটার ও সংলগ্ন ক্যাফেটিতে অবশ্যই ঢুঁ মারা দরকার।

প্রতি বছর ৫ নভেম্বর আয়োজিত পৃথ্বী উৎসব তো বলিউডেরই উৎসব, তাই সে সময় কাটিং চা, মজাদার পরোটা (মুম্বাইয়ের চায়ে ও পারাঠা!) সহযোগে দারুণ সব শো উপভোগ করতে পৌঁছে যেতে পারেন প্রিয়জনকে নিয়ে।

তারকাদের জন্মদিন হোক বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার ছুতোয়, প্রায়ই তারা মুম্বাইয়ের আনাচে-কানাচে পৌঁছে যান এই রেস্তোরাঁগুলোর আঙ্গিনায়। আর ভক্তরাও পর্দায় দেখা পছন্দের মানুষগুলোকে একটু কাছ থেকে পেতে, একটা ফটোগ্রাফ কিংবা অটোগ্রাফের আগ্রহে ছুটে যান সেখানে।

 

Comments