ইফতারে প্রাণ জুড়াবে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী শরবত মলিদা

কিছুদিন আগে জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে একটি জমকালো মেলা আয়োজিত হয়। বিভিন্ন স্বাদের খাবারের স্বাদ নিতে আমার পেটুক মন নিয়ে চলে যাই মেলায়। আর সেখানেই চোখে পড়ে বরিশালের এক বিশেষ শরবত—মলিদা। অনেকদিন ধরেই চেখে দেখার ইচ্ছে ছিল, তাই সুযোগ হাতছাড়া করলাম না। এর স্বাদ বেশ ইউনিক। বাসায় ফিরে সেই স্বাদ ভুলতে পারলাম না, তাই নিজেই বানানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। কয়েকবার চেষ্টা করতেই ঠিকঠাক স্বাদও চলে এলো! এখন তো মাঝে মাঝেই বানাই আর উপভোগ করি এই ঐতিহ্যবাহী শরবতটি।
মলিদা বানাতে প্রথমে আধা কাপ পোলাওয়ের চাল কিংবা আতপ চাল ভালোভাবে ধুয়ে ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। অন্যদিকে এক কাপ মুড়ি ও আধা কাপ চিড়া ভালোভাবে ধুয়ে রেখে দিতে হবে। এবার ভেজানো চিড়া ও মুড়িগুলো হাত দিয়ে চটকে নিতে হবে, যাতে মুড়ি ও চিড়া পুরোপুরি নরম হয়ে যায়। এতে মলিদার টেক্সচার আরও ভালো আসবে। এর সঙ্গে আধা কাপ ফ্রেশ নারকেল কোড়া নিতে হবে, যা খাবারে দারুণ একটা মিষ্টি স্বাদ এনে দেবে।
ভিজিয়ে রাখা চালগুলো ব্লেন্ডারে মিহি করে বেটে নিতে হবে। এরপর সেই বাটানো চালের মধ্যে দুই কাপ খাঁটি দুধ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার এক টেবিল চামচ ফ্রেশ আদা বাটা যোগ করতে হবে, তবে অবশ্যই ফ্রোজেন আদা ব্যবহার করা যাবে না। কারণ তাজা আদার স্বাদই মলিদার মূল বৈশিষ্ট্য।
এরপর আগে থেকে ধুয়ে রাখা মুড়ি ও চিড়া মিশিয়ে নিতে হবে। এখন আখের গুড় যোগ করতে হবে। এটি পুরোপুরি নিজের পছন্দ অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে। কেউ বেশি মিষ্টি পছন্দ করলে গুড়ের পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন, আবার কেউ চাইলে একটু কম মিষ্টি রাখতে পারেন।
সবশেষে কিছু কিশমিশ ও নারকেল কুড়ানো দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার ভালোভাবে নাড়তে হবে, যেন সব উপকরণ একসঙ্গে মিশে যায়।
বরিশালের ঐতিহ্যবাহী মলিদা সাধারণত গ্লাসে পরিবেশন করা হয়। এই শরবত শুধু দেখতে নয়, খেতেও দারুণ লোভনীয়!
দুধ, নারকেল, আদা, আখের গুড়—সবকিছুর মিশ্রণে এতে তৈরি হয় এক দারুণ স্বাদ, যা একদিকে মিষ্টি, অন্যদিকে সুগন্ধে ভরপুর। ঠান্ডা বা গরম যেকোনোভাবেই এটি খাওয়া যায়, তবে বানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশন করলে এর স্বাদ সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য হয়।
Comments