পাটশাক দিয়ে বিক্রমপুরের দুই রেসিপি

গ্রামবাংলায় পাটশাক ভাজি ও পাটশাকের বড়া অত্যন্ত সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় খাবার। বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জ জেলার কাসুন্দি ঐতিহ্যবাহী, আর এই অঞ্চলের মানুষের কাছে কাসুন্দি দিয়ে পাটশাক ভাজি ও পাটশাকের বড়া খুবই প্রিয়।
চলুন জেনে নিই এ দুটি রেসিপি।
পাটশাকের বড়া
উপকরণ
পাটশাক- ১ আঁটি
হলুদ গুঁড়ো- ১/২ চা চামচ
মরিচ গুঁড়ো- ১/২ চা চামচ
চালের গুঁড়ো- ১ কাপ অথবা শাকের পরিমাণ অনুযায়ী কম-বেশি। ময়দা/বেসন- ১ কাপ
সরিষা অথবা সয়াবিন তেল- পরিমাণ অনুযায়ী
লবণ- স্বাদ অনুযায়ী
প্রণালি
পাটশাক প্রথমে ভালো করে বেছে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। পাতাগুলো কুচি করে না কেটে পাতার মাঝখানের শিরাটা ফেলে দিয়ে আস্ত রাখতে পারেন বড়া বানানোর জন্য।

একটি পরিষ্কার পাত্রে চালের গুঁড়ো এবং ময়দা অথবা বেসন নিয়ে নিন। এর সঙ্গে ১/২ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, ১/২ চা চামচ মরিচের গুঁড়ো ও স্বাদমতো লবণ দিন। পরিমাণমতো পানি দিয়ে সবগুলো উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। খেয়াল রাখতে হবে মিশ্রণটি যাতে বেশি পাতলা বা বেশি ভারী হয়ে না যায়। তবে প্রথমেই বেশি পরিমাণে পানি দেওয়ার পরিবর্তে অল্প অল্প করে পানি ঢালুন এবং মেশাতে থাকুন।]
এরপর চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে তেল দিন। তেল গরম হওয়ার পর কয়েকটি করে পাট পাতা একসঙ্গে লম্বা করে নিয়ে মিশ্রণে মাখিয়ে নিন এবং ডুবো তেলে ছাড়ুন। একপাশ একটু ভাজা হলে উল্টে দিতে হবে। এভাবে ভালোভাবে উভয় দিক ভেজে নিতে হবে। তেলে ছাড়ার পর খেয়াল রাখতে হবে বড়াগুলো একটার সঙ্গে যাতে আরেকটি লেগে না যায়। চুলার আঁচ মাঝারি থেকে কমের দিকে রাখতে হবে।
ভালোমতো তেল ঝরিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে নামানোর পর টিস্যু পেপারে বা পেপার টাওয়েলে রাখুন।
মচমচে পাটশাকের বড়া কাসুন্দি অথবা পছন্দ অনুযায়ী সস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন। এটি বিকেলের নাশতা হিসেবে খেতে পারেন বা গরম ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন যেকোনো সময়।
কাসুন্দি দিয়ে পাটশাক ভাজি
উপকরণ
পাটশাক- ২ আঁটি
হলুদ গুঁড়ো- ১ চা চামচ বা তার চেয়ে একটু কম
কাঁচামরিচ- ৫টি। ফালি করা
শুকনো মরিচ- ২টি
পেঁয়াজ- ৩টি (বড় হলে ২টি)। কুচি করে নিতে হবে।
রসুন- ১টি। কুচি করে নিতে হবে
সরিষা অথবা সয়াবিন তেল- ২ টেবিল চামচ অথবা পরিমাণ অনুযায়ী
লবণ- স্বাদ অনুযায়ী
কাসুন্দি
প্রণালি
প্রথমে পাটশাক ভালো করে বেছে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর পাতাগুলো ছোট করে কেটে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।

চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে তাতে ২ টেবিল চামচ তেল দিন। তেল ভালোমতো গরম হওয়ার পর ২টি শুকনো মরিচ দিন। মরিচ ভাজা হওয়ার পর কুচি করে রাখা রসুন দিয়ে দিন। রসুনে হালকা বাদামী রং ধরলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিন।
পেঁয়াজ ভালোমতো ভাজা হলে পানি ঝরিয়ে রাখা পাটশাক দিয়ে দেবেন। একইসঙ্গে ফালি করা ৫টি কাঁচা মরিচ, এক চা চামচ বা তার চেয়ে কিছুটা কম হলুদ এবং স্বাদমতো লবণ দিয়ে দিন। ভালো করে নাড়তে হবে যাতে সবগুলো উপকরণ মিশে যায়। পাটশাক থেকে উঠে আসা পানি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। খেয়াল রাখতে হবে কড়াইয়ের নিচে লেগে যাতে পুড়ে না যায়। ভালোভাবে ভাজা হওয়া পর্যন্ত নাড়ুন। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে নিন।
এবার সঙ্গে পছন্দমতো পরিমাণে কাসুন্দি দিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। যারা ঝাল খেতে পছন্দ করেন, তারা সঙ্গে নিতে পারেন শুকনো মরিচ ভাজা।
Comments