সাঁতার কাটার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত যেসব কারণে

সাঁতার কাটা
ছবি: সংগৃহীত

ব্যায়াম হিসেবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুস্থ রাখার দারুণ এক উপায় সাঁতার। যদি আপনার নিয়মিত সাঁতার কাটার সুযোগ থাকে এবং কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকে তাহলে সাঁতারের অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারেন।

সাঁতার কাটার উপকারিতা কী এবং কী কী সতর্কতা প্রয়োজন জেনে নিন এএমজেড হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডের পুষ্টি, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক ডিজিজ কনসালটেন্ট ডা. মো. জয়নুল আবেদীন দীপুর কাছ থেকে।

সাঁতারের উপকারিতা

ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, ব্যায়াম হিসেবে সাঁতারের উপকারিতা অনেক। যেমন-

১. সাঁতারের মাধ্যমে পুরো শরীরের সব পেশী সক্রিয়ভাবে কাজ করে।

২. শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি খরচের পাশাপাশি হৃদরোগের জন্য সাঁতার সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম।

৩. সাঁতারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হলো এটা দৌড়ানোর সমান পরিমাণ ক্যালরি খরচ করে। কিন্তু দেহের হাড় ও জয়েন্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করে না। তাই ব্যায়াম হিসেবে সাঁতার অন্যতম বলা যায়।

৪. মানুষের শরীর ও মনের ওপর সাঁতারের ইতিবাচক প্রভাব অনেক। শরীরের মাংস পেশীর শক্তি বাড়ানো, পেশীর সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৫. ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ফ্যাটি লিভারের রোগীদের সুস্থতার জন্য সাঁতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৬. গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সাঁতারের প্রভাব অপরিসীম। মুডের ওপর প্রভাব রেখে ডিপ্রেশন ও স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে।

৭. অনিদ্রা, ঘুমের সমস্যার সমাধান হয় নিয়মিত সাঁতারের অভ্যাস গড়ে তুললে।

সাঁতার কাটায় ঝুঁকি কাদের

ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, সাধারণভাবে সাঁতার না জেনে বা বাচ্চাদের হঠাৎ করে একা সাঁতার কাটা বা শিখতে যাওয়া উচিত নয়, এতে ঝুঁকি রয়েছে। তাছাড়া কানের ইনফেকশন থাকলে বা অন্যান্য জটিল শারীরিক অসুস্থতা থাকলে সাঁতার কাটায় ঝুঁকি রয়েছে।

গর্ভকালীন অবস্থায় প্রথম ও শেষ ৩ মাস সাঁতার কাটা উচিত নয়। কারো পানির প্রতি ভীতি বা অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা আছে, তাদেরও সাঁতার কাটা থেকে বিরত থাকা উচিত।

সাঁতার কাটায় যা মনে রাখা জরুরি

ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, কিছু বিষয় খেয়াল রেখে সাঁতার কাটার অভ্যাস গড়ে তুললে সাঁতার থেকে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া সম্ভব।

১. সাধারণত সব মানুষেরই সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট করে সপ্তাহে ৫ দিন মাঝারি কষ্টের শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা উচিত। সেই হিসেবে সাঁতারও একই পরিমাণ সময় করা যেতে পারে বলে জানান ডা. জয়নুল আবেদীন।

২. একেবারে ছোট বাচ্চা যেমন ৬ মাসের বাচ্চাকেও বাচ্চাদের বাথ-টাবে ধরে রেখে সাঁতার কাটানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই কুসুম বা আরামদায়ক গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।

৩. তবে স্বাধীনভাবে সাঁতার কাটার দক্ষতা অর্জনের উদ্দেশ্যে সাঁতার শেখাতে চাইলে ৪ থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করা ভালো ও নিরাপদ।

৪. সাধারণত ভরপেট খেয়ে কিংবা একদম খালি পেট যেমন- রোজা অবস্থায় সাঁতার কাটা উচিত নয়।

৫. যারা ইনসুলিন ব্যবহার করেন তারাও সাঁতারের আগে রক্তে গ্লুকোজ মেপে নেবেন।

৬. সাঁতারের পর কিছুক্ষণ সময় নিয়ে স্বাভাবিক খাবার খাবেন।

৭. যার যার সুবিধা ও সুযোগ অনুযায়ী পুকুর বা সুইমিং পুল যেকোনো জায়গায় সাঁতার কাটা যাবে। সাধারণত সুইমিং পুলে পানির মান নিয়ন্ত্রণের জন্য কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। খেয়াল রাখতে হবে যাতে এইসব কেমিক্যাল নিরাপদ পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। এই কেমিক্যাল থেকে বাঁচার জন্য সুইমিং পুলে সাঁতার কাটার পর ভালোভাবে সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করে গোসল করে নেওয়া উচিত।

 

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

7h ago