‘হুমায়ুন ফরীদি একজনই’

হুমায়ুন ফরীদি
হুমায়ুন ফরীদি। স্টার ফাইল ফটো

মঞ্চের দাপুটে অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি ঢাকা থিয়েটারের হয়ে সংবাদ কার্টুন নাটকে ছোট্ট চরিত্র দিয়ে অভিনয় শুরু করেছিলেন। 

তারও আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অভিনয় করতেন। 

শকুন্তলা, কীর্তনখোলা, ফণীমনসা, কেরামত মঙ্গল, মুনতাসীর ফ্যান্টাসি, ভূত তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক।

টেলিভিশন নাটকের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করার পর তার সময়ের সেরা অভিনেতা বলা হয় ফরীদিকে। 

সংশপ্তক নাটকে তার অভিনীত 'রমজান' চরিত্রের কথা আজও শোনা যায় অনেকের মুখে মুখে।

তারও আগে 'ভাঙনের শব্দ শুনি' ধারাবাহিক নাটকে 'সেরাজ তালুকদার' চরিত্রে অভিনয় করেও দর্শকদের মন জয় করেন।

সেরাজ তালুকদার এবং কানকাটা রমজান চরিত্র দুটি টেলিভিশন নাটকের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে এখনো।

কোথাও কেউ নেই ধারাবাহিকে উকিলের চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন। এছাড়া পাথর সময়, অযাত্রা, একদিন হঠাৎসহ অসংখ্য নাটকে ছিল তার সরব উপস্থিতি। 

নেতিবাচক ও ইতিবাচক-দুইরকম চরিত্রেই তিনি সফলতার পরিচয় দিয়েছেন।

বহুমাত্রিক অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় জীবনের তিন অধ্যায় মঞ্চ, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র, সব মাধ্যমেই সফল ছিলেন।

'দহন' সিনেমায় নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। কিন্তু একটা সময়ে ভিলেন চরিত্রেই বেশি সরব হয়ে ওঠেন।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত হুমায়ুন ফরীদি নেই আজ এক যুগ।

আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন ফরীদির প্রয়াণ দিবস। ১২ বছর আগে এই দিনে তিনি পৃথিবী মঞ্চের মায়া ত্যাগ করে পাড়ি জমান অনন্ত মঞ্চে।

হুমায়ুন ফরীদির ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং সহশিল্পী রাইসুল ইসলাম আসাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের সময়ের অন্যতম সেরা অভিনেতা ছিলেন ফরীদি। আমি বলব, অসম্ভব মেধাবী অভিনেতা ছিলেন তিনি। যেকোনো চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারতেন। অভিনয়টাকে হৃদয়ে ধারণ করতেন। এক জীবনে অভিনয় ছাড়া আর কিছুই করেননি তিনি।'

'ফরীদি খুব আড্ডাবাজ মানুষ এবং তার মনটা ছিল শিশুর মতো সরল। সবাইকে আড্ডায় মাতিয়ে রাখতে ভালোবাসতেন। তার তুলনা কেবল তার নিজের সঙ্গেই,' বলেন আসাদ।

আরেক অভিনেতা সোহেল রানা বলেন, 'অসম্ভব গুণী শিল্পী ছিলেন ফরীদি। তার অভিনয় মুগ্ধ করেছে সবাইকে। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে অন্য মানুষ হয়ে যেতেন। তাকে চেনা যেত না। অভিনয় করার সময় শতভাগ মনোযোগী থাকতেন। নিজেকে ভাঙার ক্ষমতা ছিল তার মধ্যে।'

'অসাধারণ অভিনয় ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছিলেন ফরীদি। তার মতো অভিনেতার আরও বহুদিন প্রয়োজন ছিল,' বলেন সোহেল রানা।

তারিক আনাম খান বলেন, 'ফরীদি একজনই। স্বতন্ত্র অভিনয় দিয়ে  নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। তার চোখ, মুখ ও শরীর যেন অভিনয় করত। বড় কথা হচ্ছে অভিনয়ের প্রতি তার প্রেম ছিল প্রবল। তার জন্মই যেন হয়েছিল অভিনয়ের জন্য।'

'ফরীদি বড় অসময়ে চলে গেছেন। তার আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল। তার প্রতি ভালোবাসা,' বলেন তারিক আনাম।

 

Comments

The Daily Star  | English

Cops get whole set of new uniforms

The rules were published through a gazette yesterday, repealing the previous dress code of 2004

1h ago