খেজুরের পুষ্টিগুণ, কয়টি খাওয়া ভালো

খেজুরের পুষ্টিগুণ
ছবি: সংগৃহীত

সুস্বাদু এবং বেশ পরিচিত একটি ফল খেজুর। রোজার মাসে ইফতারে খেজুর রাখেন প্রায় সবাই। প্রচুর ভিটামিন এবং মিনারেলস যেমন কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি উপাদানসমৃদ্ধ এই খেজুর শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই শুধু রমজান মাস নয়, সারা বছরই খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখা যেতে পারে।

খেজুরের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মিরপুর জেনারেল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের পুষ্টিবিদ তারানা জান্নাত মুমু

তারানা জান্নাত মুমু বলেন, খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল। রোজার মাসে শুধু ইফতারে নয়, সেহরিতেও রাখতে পারেন খেজুর।

  • ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির জোগান দিতে পারে খেজুর। তাই সারাদিন রোজা থেকে খেজুর খেলে শরীরে শক্তি পাবেন। এ ছাড়া নিয়মিত খেজুর খেলে দিনের কর্মব্যস্ততার ক্লান্তিভাব দূর হয় অনেকটাই।
  • সারাদিন রোজা থাকার ফলে শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যায় এবং তীব্র ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। ইফতারে খেজুর খেলে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ হয়। শুরুতেই দুই-তিনটা খেজুর খেলে ক্ষুধার তীব্রতা কমে যায়।
  • খেজুরে আছে প্রচুর ভিটামিন বি। ভিটামিন বি৬ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
  • খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
  • নিয়মিত খেজুর খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। খেজুরের লিউটেন এবং জিক্সাথিন নামক উপাদান চোখের রেটিনা ভালো রাখে।
  • খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। এটি অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতে পারে। নিয়মিত খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ভালো হয়।
  • দৈনিক আয়রনের চাহিদার প্রায় ১১ ভাগ পূরণে সক্ষম খেজুর। আয়রণসমৃদ্ধ  হওয়ায় খেজুর শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তস্বল্পতায় ভোগেন যারা তারা খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখতে পারেন।
  • খেজুর থেকে প্রায় ২০-২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ভূমিকা রাখে।
  • খেজুরে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। হাড় গঠনে, হাড়ের ক্ষয়রোধে ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়িয়ে হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখতে খেজুর উপকারী।
  • নিয়মিত খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো যায়।
  • খেজুরের বিভিন্ন উপাদান শরীরের বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ প্রতিহত করতে পারে।

কতটুকু খাবেন

খেজুর প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি একটি ফল। তাই খেজুরকে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন দুধজাতীয় খাদ্যে চিনির পরিবর্তে খেজুর যোগ করা যেতে পারে। তবে নিয়মিত বেশি পরিমাণে খেজুর খেলে উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি হতে পারে।

একজন ব্যাক্তি দিনে কয়টা খেজুর খেতে পারবেন সেটা নির্ভর করে তার শারীরিক অবস্থার ওপর। একজন সুস্থ ব্যক্তি সকালে, মধ্যকালীন নাশতা বা বিকালের নাশতায় ২-৩টি খেজুর খেতে পারেন। যারা ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম করেন তারা পরিশ্রম শেষে ৪-৫টা খেজুর খেতে পারেন। যারা ওজন বাড়াতে চান তারা দুধের সঙ্গে কয়েকটা খেজুর মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।

সতর্কতা

  • খেজুর অনেক উপকারী হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি গ্রহণ করা উচিত নয়। খেজুরে গ্লুকোজ আছে, যা  রোগীর শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • যাদের শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি খেজুর তাদের পটাশিয়ামের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে শরীরে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

     

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

Bangladesh is likely to benefit from reduced US tariffs on garment exports under a new clause that incentivises the use of American materials, potentially enhancing the country’s competitiveness in the US market.

29m ago