এই ঈদে কেমন পোশাক ট্রেন্ডে

ঈদের পোশাক
ছবি: কালার ক্রেজের সৌজন্যে

ঈদের আনন্দকে বহু গুণে বাড়িয়ে দেয় নতুন পোশাক। একটা সময় পুরো ঈদের বাজার বিদেশি পোশাক আর ডিজাইন দখল করে ছিল। বর্তমানে তরুণ উদ্যোক্তারা ও দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো নিজেদের নান্দনিক ডিজাইনে পোশাক নিয়ে আসছে। ভালো মানের কাপড়ে আধুনিক ডিজাইন ধীরে ধীরে বাইরের পোশাকের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে।

যারা ফ্যাশন সচেতন তারা বিদেশি পোশাকের চেয়ে দেশীয় পোশাক ও ডিজাইনের প্রতি আস্থা রাখছেন। আর ফ্যাশন ডিজাইনাররাও গ্রাহকদের হতাশ করছেন না। প্রতি বছরই ট্রেন্ড পরিবর্তন হচ্ছে। আসছে নতুন নতুন নকশা, পোশাকের কাটেও আসছে পরিবর্তন।

ছবি: কালার ক্রেজের সৌজন্যে

আসছে ঈদে ডিজাইনারদের মুন্সিয়ানাতে নতুন ভাবনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে পোশাকে। গতানুগতিক বাঙালি পোশাকের নকশাতে আনা হয়েছে ভারী কাজের ছোঁয়া।

ঈদে বাঙালি নারীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে শাড়ি। সময়টা এখন দেশীয় শাড়ির। জামদানি, মণিপুরি, মসলিন শাড়িগুলো বেশ কয়েক বছর ধরেই নারীদের কাছে আবেদনীয়।  গুণগত মান ও কাজের ওপর আনা হয়েছে আমূল পরিবর্তন। কাজের ওপর নির্ভর করে দাম। এর সঙ্গে শাড়িতে প্যাচওয়ার্ক, এমব্রয়ডারি, হ্যান্ড স্টিচ, ব্লকের কাজ নজরে পড়ছে বেশি।

ফ্যাশন হাউজ কালার ক্রেজের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার মারুফা আক্তার স্বর্ণা জানান, যেকোনো উৎসবে শাড়িকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন তারা। এবার তারা নিজেদের উৎপাদিত মসলিনের ওপর নিজস্ব প্রিন্টের ডিজাইন করেছেন। তাছাড়া হাফ সিল্ক, মসলিন, পিউর সিল্ক, সুতি, মণিপুরি শাড়িগুলো এবার ঈদে গ্রাহকদের কাছে বেশ সাড়া পেয়েছে।

তাছাড়া অনেকেই এন্টিক ডিজাইন বেশ পছন্দ করছেন, যা কখনোই পুরোনো হয় না। 

ছবি: কালার ক্রেজের সৌজন্যে

ফ্যাশন হাউজ ভার্মিলিয়নের স্বত্বাধিকারী ফেরদৌসি আরা বলেন, 'প্রতি বছর আমরা পুরোনো কোনো এক শাড়িকে নতুনভাবে উপস্থাপন করি। এবার আমরা নিয়ে এসেছি জরি শাড়ি, আর এতে সাড়াও পাচ্ছি বেশ।'

ধানমন্ডি হকার্স ও বেইলি রোডে কাঞ্জিভরম, পঞ্চমকলি, অপেরা কাতান, কাঁঠাল কাতান, আলাপ কাতান, ভোমকা কাতান, খাদি কাতানের পাশাপাশি টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, জামদানির কদর বেড়েছে এই ইদে। কাপড়ের কাজের মধ্যে ছোট ফুল ও পাতার নকশার চল একটু বেশি। তাছাড়া আঁচল ও পাড়ের ক্ষেত্রে সোনালি ও রূপালি জরির কাজের দেখা মেলছে বেশি।

এখন শাড়ি পরার ক্ষেত্রেও এসেছে নতুনত্ব। এবার ডিজাইনার ব্লাউজগুলোর চাহিদা আছে বেশ। গতানুগতিক ব্লাউজের ডিজাইনের বাইরে এসে একটু নতুনের ছোঁয়া খুঁজছেন সবাই। আবার অনেকেই আগের মতো শুধু ব্লাউজ দিয়ে শাড়ি না পরে ক্রপ টপ, শার্ট, টপ, টিশার্টকে শাড়ির যুগলবন্দী করেছেন। আবার অনেকেই সাধারণ শাড়িকে অসাধারণ লুক দিতে ডিজাইনার ব্লাউজের দিকে ছুটছেন।

সবাই একটু ঢিলেঢালা আর আরামদায়ক পোশাক পছন্দ করছেন বলে জানান ডিজাইনার মারুফা আক্তার স্বর্ণা। শাড়ির মতো সালোয়ার কামিজের অনুরাগীর সংখ্যাও কম নয়।

ছবি: কালার ক্রেজের সৌজন্যে

এবার লম্বা ঝুলের কামিজের চলনটা একটু বেশি। সালোয়ার কামিজে গলা ও হাতায় নতুনত্ব দেখা যাচ্ছে বেশ। মসলিন, সিল্ক, এন্ডি কটন, কটনের ওপর ব্লক, প্রিন্ট, সুই সুতার কাজ, হ্যান্ড পেইন্টের পাশাপাশি ডিজিটাল প্রিন্ট প্রাধান্য পেয়েছে। আনারকলি, ফ্রক কামিজ, সালোয়ার কামিজের পাশাপাশি কুর্তি, ফতুয়া তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে আছে। তাছাড়া ঢিলেঢালা এক রঙা বা প্রিন্টের কো-অর্ড গত বছরের মতো এবারও তুমুল জনপ্রিয়।

'এবার ঈদে গরম থাকার কথা। তাই গরমের কথা ভেবে হালকা রংগুলোকে প্রাধান্য দিয়েছেন ডিজাইনাররা। পাউডার পিংক, আকাশি, পিচ, সাদা, হালকা বেগুনি রংকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তবে এর সঙ্গে একটু  কনট্রাস্ট করা হয়েছে কুল টোনের রংগুলোকে', বলেন ফেরদৌসী আরা।

দিনের বেলায় পরার জন্য হালকা রং আর রাতে অনুষ্ঠানের জন্য একটু জমকালো গাঢ় রঙের পোশাক বেছে নিতে পারেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Thousands of crores of taka of citizens wasted on unnecessary projects: commerce adviser

The adviser, however, added that liabilities of foreign-funded projects should still be repaid

37m ago