ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ

আজই আসতে পারে চীন, মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে বাড়তি শুল্কের নির্বাহী আদেশ

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় দিনে আসতে পারে চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর প্রতিশ্রুত বাড়তি শুল্ক। আজ এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই দিতে পারেন তিনি।

সোমবার কানাডা ও মেক্সিকান পণ্য আমদানিতে ব্যাপক শুল্ক আরোপের আভাস দেন তিনি, যা আগামী ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর হতে পারে। মঙ্গলবার চীনের পণ্যেও শুল্ক আরোপের বিষয়টি উল্লেখ করেন নতুন প্রেসিডেন্ট।

চীনের বিষয়ে মত বদলেছেন ট্রাম্প

মার আ লাগোয় শি জিন পিং ও ট্রাম্প। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
মার আ লাগোয় শি জিন পিং ও ট্রাম্প। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

ফেব্রুয়ারির এক তারিখ থেকে চীন থেকে আমদানি হওয়া পণ্যে আরও ১০ শতাংশ কর আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বলেছিলেন, বেইজিংয়ের পণ্যে ঊর্ধ্বে ৬০ শতাংশ কর আরোপ করতে পারেন তিনি।

হঠাত করে কেন তিনি মত বদলালেন, সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।  

গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প জানান, চীন থেকে 'মাত্রাতিরিক্ত' ফেন্টানিল মাদক মেক্সিকো হয়ে মার্কিন ভূখণ্ডে প্রবেশ করছে। বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হলে চীন এসব মাদক পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করতে আরও উদ্যোগী হবে বলে মত দেন ট্রাম্প।

নির্বাচনে জেতার পর মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প। এই দুই দেশের মোট রপ্তানির মোট ৮০ ও ৯০ শতাংশ (যথাক্রমে) যুক্তরাষ্ট্রে যায়।   

কানাডার সম্ভাব্য জবাব

ট্রাম্প ও ট্রুডো। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ট্রাম্প ও ট্রুডো। ফাইল ছবি: রয়টার্স

অপরদিকে, কানাডীয় পণ্য আমদানিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কারোপ করলে যে কোনো পরিস্থিতির জবাব দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

মঙ্গলবার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আলোচনার টেবিলে ট্রাম্প খুবই দক্ষ। আলোচনার আগেই তিনি অংশীদারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।'

'ট্রাম্পের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয়' জানিয়ে ট্রুডো বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণ অনিশ্চয়তা ডেকে আনে, পরবর্তী আনুষ্ঠানিক আলাপচারিতার অপেক্ষায় থাকুন।'

যুক্তরাষ্ট্রের যে সমৃদ্ধির অঙ্গীকার ট্রাম্প করেছেন, সে জন্য কানাডীয় সম্পদের প্রয়োজন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ট্রুডো বলেন, মার্কিন অর্থনীতিতে অনেক প্রয়োজনীয় উপকরণ কানাডা সরবরাহ করে। কাজেই দেশটির অর্থনীতির সমৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের জন্য তা অপরিহার্য।

যা ভাবছেন মেক্সিকোর নেতা

প্রাথমিক ফলে জয়লাভের পর দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখছেন ক্লদিয়া শেনবম। ছবি: এএফপি
প্রাথমিক ফলে জয়লাভের পর দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখছেন ক্লদিয়া শেনবম। ছবি: এএফপি

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকার জানালেও আরোপিত শুল্কের বিষয়ে ধীরে চলার নীতিতে থাকতে চায় মেক্সিকো। দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবম সে কথাই বলেছেন।

তবে ট্রাম্পের সঙ্গে সংলাপে বসার কথাও বলেছেন তিনি।

দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্পের কিছু পদক্ষেপ আগের মেয়াদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জানিয়ে ক্লদিয়া বলেন, 'আমরা দৃঢ়ভাবে দেশের স্বার্থ সুরক্ষা করবো।'

'গতকাল ট্রাম্প যেসব ডিক্রিতে সই করেছেন, সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে আমি বলতে চাই: মেক্সিকোর জনগণ নিশ্চিত থাকতে পারেন, আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার সুরক্ষা দেব।'

তিনি যখন এমন অঙ্গীকার করেন, তখন দেশটির পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার দুই পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

ক্লদিয়া বলেন, 'মাথা ঠাণ্ডা রাখা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ।'

গত বছরের অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন মেক্সিকোর এই বামপন্থি নেতা। ক্লদিয়া দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।

তবে মেক্সিকান পণ্যে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপের যে আভাস ট্রাম্প দিয়েছেন, পাল্টা জবাবে মার্কিন পণ্যে কোনো শুল্কারোপের হুমকি তিনি দেননি। ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন ক্লদিয়া।

এর আগে, যদি মেক্সিকান পণ্যে মার্কিন সরকার শুল্কারোপ করে, তাহলে সমানভাবে জবাব দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ক্লদিয়া ও তার অর্থমন্ত্রী। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সেই কট্টর অবস্থান থেকে সরে এসেছেন তিনি—ট্রাম্পের সঙ্গে শুল্ক লড়াইয়ে না জড়িয়ে আপোষ করাই তার লক্ষ্য।

দেশটির আশি শতাংশ রপ্তানির গন্তব্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

 

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

17h ago