কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা

কুয়েটের স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।

আজ সোমবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে তারা অনশনে বসেন।

এক দফা দাবি পূরণে গতকাল দেওয়া ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হয় আজ দুপুর ৩টায়।

সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা ড. এম এ রশীদ হলের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সেখান থেকে তারা তোষক, বালিশ, বেড কভার নিয়ে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে আসেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, সেখানে আগে থেকেই ছাত্র কল্যাণ পরিচালক, সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক অবস্থান করছিলেন। শিক্ষার্থীরা ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে যাওয়ার পর শিক্ষকরা আন্দোলনকারীদের কাছে গিয়ে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। 

কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থানে অনড় থেকে ভিসির পদত্যাগ ছাড়া কোনোভাবেই আন্দোলন থেকে সরবেন না বলে জানিয়ে দেন।

কুয়েটের স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের কয়েকজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালেও উপাচার্য নিরাপত্তা দিতে পারেননি। উল্টো ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের বাইরের একজন আদালতে মামলা করেছে। এছাড়া ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে হামলাকারী নয় বরং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।'

তারা আরও বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তারা উপাচার্যকে অপসারণের দাবি জানালেও কোনো সুফল পাননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।'

ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তাদের একটি অংশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'সাময়িক বহিস্কার ৩৭ শিক্ষার্থীর বিষয়টি বিবেচনা হবে বলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এছাড়া কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয় নিয়েও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়।'

'শিক্ষার্থীরা বলেছেন, তারা কয়েকজন মিলে সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না,' যোগ করেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উপাচার্য পদে থাকা অধ্যাপক মাছুদের বিরুদ্ধে তারা আগে থেকেই নানা অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব এবং আন্দোলন দমনচেষ্টার অভিযোগ তুলে আসছিলেন। এ বিষয়ে পাঁচ দফা দাবি জানানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

তারা জানান, হল খোলার আহ্বান জানিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও প্রশাসন তা আমলে নেয়নি। বরং আন্দোলনকারীদের বহিষ্কার ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে চাপে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে তাদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রদল বহিরাগতদের নিয়ে হামলা করেছে। অপরদিকে ছাত্রদল দাবি করে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র শিবির হামলা করেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ক্লাস বর্জন করেন এবং উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ, ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh eyes stake in $7 trillion global halal economy: Ashik Chowdhury

Industry people join Bangladesh-Malaysia Chamber-organised seminar to explore Bangladesh’s potential

1h ago