শীতে বাঁধাকপি দিয়ে গরুর মাংস

কেমন হয় এই দুটো মজাদার আইটেমকে মিশিয়ে রান্না হলে?
বাঁধাকপি দিয়ে গরুর মাংস
ছবি: সংগৃহীত

বাঁধাকপি প্রায় সারা বছর পাওয়া গেলেও শীত এলে এই সবজির স্বাদ যেন অনেক বেশি বেড়ে যায়। ওদিকে গরুর মাংস তো ভোজনরসিকদের 'অলটাইম ফেভারিট'। কেমন হয় এই দুটো মজাদার আইটেমকে মিশিয়ে রান্না হলে? সেইসঙ্গে এই রেসিপিতে থাকবে শীতকালীন কাঁচাবাজারের অন্যান্য আকর্ষণও।

যা যা লাগবে

●         বাঁধাকপি কুঁচি ৩ কাপ

●         গরুর মাংস আধা কেজি

●         প্যাকেটজাত গরুর মাংসের মশলা

●         হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ

●         মরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ

●         ২টি এলাচ, ১টি দারচিনি, ২টি তেজপাতা

●         গরম মশলা গুঁড়ো আধা চা চামচ

●         ৫টি পেঁয়াজ (বড়)

●         ১টি রসুন (মাঝারি)

●         নতুন আলু ২-৩টি (মাঝারি)

●         হলুদ রঙের ১টি ক্যাপসিকাম

●         ৩-৪টি টাটকা পেঁয়াজকলি

●         সর্ষে তেল (পরিমাণমতো)

●         লবণ (পরিমাণমতো)

●         চিনি আধা চা চামচ

রন্ধনপ্রণালী

এ রান্নায় মোটমাট ৩টি ধাপ রয়েছে। প্রথমেই বাঁধাকপি কুচিগুলোকে একটু হলুদ, লবণ, জিরে গুঁড়ো দিয়ে নরম করে ভেজে নিতে হবে। তারপর সেটি পরে ব্যবহারের জন্য তুলে রাখুন।

রান্নাটিতে হলুদ ক্যাপসিকাম দেওয়ার বিষয়টা শুধুমাত্র রঙের জন্য। রান্না শেষে ক্যাপসিকাম বা পেঁয়াজকলির আলাদা অস্তিত্ব বোঝা যাবে না, কিন্তু স্বাদের সঙ্গে মিলেমিশে যাবে পুরোটাই। আর ক্যাপসিকামের এই রংটা মাংসের গ্রেভির জন্য মানানসই। সবুজ বা লাল ক্যাপসিকাম ঠিক এই তরকারির সঙ্গে যায় না, ওটা ফ্রায়েড রাইস বা চাওমিনের জন্য বেশি ভালো।

সে যাই হোক, রান্নার এ পর্যায়ে আলাদা ক্যাপসিকাম আর আলুগুলো মাঝারি আকারের কিউব করে কেটে নিন। পেঁয়াজকলিগুলোও দুই ইঞ্চি করে কেটে নিতে হবে। এরপর একটু হলুদ, লবণ আর মরিচ গুঁড়ো মাখিয়ে ডুবো তেলে, মাঝারি আঁচে ২-৩ মিনিট ভেজে নিন। তারপর সেগুলোও আলাদা বাটিতে রেখে দিন। আলুতে একটা সুন্দর ভাজা ভাজা আবরণ পড়বে, যার ফলে বাড়তি পিচ্ছিল ভাবটা চলে যাবে।

এতে গরুর মাংসটাও একটু বিশেষভাবে রান্না করতে হবে। তাই এর মেরিনেশনটাও হবে বিশেষ। পেঁয়াজ, রসুন, আদা বেটে নিতে হবে। সেইসঙ্গে প্যাকেটজাত গরুর মাংসের মশলা ছোট প্যাকেটের অর্ধেকটা দিয়ে মাংসটাকে ভালোভাবে মাখাতে হবে। লবণ, বাড়তি হলুদ গুঁড়োও দিয়ে দিন সঙ্গে। এরপর মাখানোর পাত্রেই ৩-৪ চামচ সর্ষের তেল দিয়ে আরেকবার শেষমেশ মাখিয়ে ১৫-২০ মিনিটের জন্য ঢেকে রেখে দিন। এতে করে মশলা মিশবে ভালো। ততক্ষণে আরেকটা চুলায় গরম পানি বসিয়ে দিন, তরকারির ঝোলের জন্য ফুটন্ত পানি দিলে মাংস একটু তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়।

এবারে কড়াইয়ে বসিয়ে দিন মাংস, মাখানোর তেল ছাড়াও পাত্রে কিছুটা তেল দিয়ে দিন।  অন্তত ৮ মিনিট ধরে মাঝারি আঁচে মাংস কষাতে থাকুন। তেল ছেড়ে আসলে তাতে আলাদা করে ভেজে রাখা রাখা ক্যাপসিকাম, আলু আর পেঁয়াজকলিগুলো দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন। এরপরই তাতে একটু একটু করে ফুটন্ত গরম পানির ঝোল যোগ করতে থাকুন। কড়াইয়ের আকার যদি ছোট হয় তবে এই সময়টায় চাইলে বড় হাঁড়িতে নিয়ে নিতে পারেন তরকারিটা। আর নইলে কড়াইতেও রাখতে পারেন। যেভাবে সুবিধা। তরকারিতে বিশেষ কিছু কাজ বাকি নেই এখন আর। পাত্র ঢেকে দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না হতে থাকুক। মাঝে মাঝে একটু নেড়ে দিতে হবে যাতে মশলা-টশলা পাত্রের নিচে লেগে না যায়।

৪৫ মিনিট রান্নার পর যখন ঝোল অনেকটা কমে এসেছে, তখন এক কাপ পানি যোগ করে তাতে ভেজে রাখা বাঁধাকপিগুলো দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নিন। মাংস সেদ্ধ হয়েছে কি না, আর লবণের স্বাদ ঠিক আছে কি না– ওটাও একটু দেখে নিতে হবে। আরও ৫-৬ মিনিট রান্নার পর আধা চামচ চিনি আর আধা চামচ গরম মশলা গুঁড়ো আর সিকি চামচ ভাজা জিরার গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন। সুন্দর একটা গন্ধ বেরোবে।

গরুর মাংসের এই পদটাতে কিন্তু ঝোল খুব একটা থাকবে না, বাঁধাকপিগুলো মাংসের গায়ে লেগে থাকবে। বাঁধাকপির মিষ্টতায় মাংসের ঝাল ঝাল ভাবটা একেবারে 'ব্যালেন্স' হয়ে যাবে। ঝাল-ঝোল আর মিষ্টতার এক দারুণ সমন্বয় হবে এই রান্নায়। বাসমতি চালের ভাত কিংবা কালিজিরা চালের ঝুরঝুরে এক প্লেট মটর-পোলাওয়ের সঙ্গে এই রান্নাটা একদম জমে যাবে।

Comments