হত্যার প্রমাণ পাইনি, দুর্ঘটনা না আত্মহত্যা জানার চেষ্টা করছি: পুলিশ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ (২৪) হত্যাকাণ্ডের ১ মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু, তদন্তকারী সংস্থা এখনো হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি।

টাইমলাইন

নভেম্বর ৫

গত ৪ নভেম্বর ফারদিন বাসায় না ফেরায় তার বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা ৫ নভেম্বর রাজধানীর রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

নভেম্বর ৭

এদিন বিকেল ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নভেম্বর ৮

ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শেখ ফরহাদ জানান, ফারদিনের মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন আছে। তার বুকের ভেতরেও আঘাতের চিহ্ন আছে। এটি অবশ্যই হত্যাকাণ্ড, পানিতে ডুবে মৃত্যু না।

মরদেহের সঙ্গে ফারদিনের মোবাইল, ওয়ালেট ও ঘড়ি পাওয়া যায়।

নভেম্বর ৯

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, ফারদিনের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ লোকেশন ছিল কেরানীগঞ্জ। পুরান ঢাকার জনসন রোড থেকে ফারদিন সেখানে গিয়েছিলেন।

নভেম্বর ১০

রামপুরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা। মামলায় ফারদিনের বন্ধু আমাতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং আদালত তার ৫ দিনেরে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ জানায়, ৪ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে ফারদিনকে বুশরার সঙ্গে রিকশায় রামপুরায় দেখা গেছে।

তদন্তের জন্য ফারদিন হত্যা মামলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) স্থানান্তর করা হয়।

ওই দিনই র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' ২৩ মামলার ফেরারি আসামি শাহীন মিয়া ওরফে সিটি শাহীন (৩৫) নিহত হন।

নভেম্বর ১১

পুলিশ জানায়, ফারদিনকে নারায়ণগঞ্জের চনপাড়ায় হত্যা করা হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন। ৫ নভেম্বর রাত ২টা ৩৫ মিনিটে সেখানেই ফারদিনের মোবাইল ফোন সক্রিয় অবস্থায় ছিল।

সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ও ডিবি চনপাড়ায় অভিযান চালায়। কিন্তু, অভিযানে কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ফারদিন চনপাড়ায় মাদক কিনতে গিয়েছিলেন, এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেন তার সহপাঠীরা। বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব বলেন, 'গত ৩ বছরে আমি ফারদিনকে কখনো ধূমপান করতেও দেখিনি।'

নভেম্বর ১২

পুলিশ জানিয়েছে, ফারদিন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার বন্ধু বুশরার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

পুলিশ ও র‌্যাব জানায়, তারা এখনো সুনির্দিষ্ট কিছু খুঁজে পায়নি এবং তারা বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করছে।

পুলিশ বলেছে, তারা ফারদিনের মৃত্যু এবং তার মরদেহ উদ্ধারের একদিন পর আরেকটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধারের মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা তদন্ত করছে।

সূত্র জানায়, চনপাড়া বস্তি থেকে সন্দেহভাজন ২ মাদক চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু, এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নভেম্বর ১৩

ফারদিন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চনপাড়া বস্তির ৪ মাদক চোরাকারবারি রায়হান মাহমুদ, উজ্জল, রনি ও নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পরিবারের সদস্যরা। তবে, এ বিষয়েও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নভেম্বর ১৪

র‌্যাব জানায়, তারা চনপাড়া বস্তির মাদক চোরাকারবারি রায়হান মাহমুদ ও তার গ্যাংয়ের সদস্যদের এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে।

নভেম্বর ১৫

র‌্যাব জানায়, রায়হান মাহমুদ ও তার গ্যাং মিলেই ফারদিনকে চনপাড়া বস্তিতে হত্যা করেছে বলে সন্দেহ করার মতো যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে।

নভেম্বর ১৬

হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় ফারদিনের বন্ধু বুশরাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নভেম্বর ১৭

পুলিশ জানায়, ৫ নভেম্বর রাত ২টা ৫ মিনিটে ফারদিনকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড়ে দেখা গেছে। সেখান থেকে লেগুনায় করে ফারদিন বিশ্বরোড থেকে তারাবোর দিকে যাচ্ছিলেন। লেগুনায় আরও ৪ জন ছিলেন।

নভেম্বর ১৯

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করার পর পুলিশ জানায়, ফারদিনকে রাত ২টা ২৭ মিনিটে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ে নামতে দেখা যায় এবং একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চনপাড়া বস্তির দিকে যেতে দেখা যায়।

তবে, পুলিশের দাবি প্রত্যাখ্যান করে ফারদিনের বাবা জানান, তিনি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এমন কিছুই বুঝতে পারেননি।

নভেম্বর ২৫

তদন্তকারী সংস্থা হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে হত্যার কারণ বের করতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করে ফারদিনের পরিবার।

নভেম্বর ২৭

পুলিশ বলেছে, কীভাবে ও কেন ফারদিনের মৃত্যু হয়েছে, তা জানতে তারা নতুন তত্ত্ব বিবেচনা করছে।

ডিসেম্বর ৩

পুলিশ জানিয়েছে, ফারদিনকে হত্যার প্রমাণ তারা পায়নি। তাই কোনো দুর্ঘটনায় ফারদিনের মৃত্যু হয়েছে নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন— পুলিশ এখন সেটা বের করার চেষ্টা করছে।

Comments

The Daily Star  | English
Fuel prices cut

Fuel prices cut by Tk 1 per litre

Tk 104 for diesel and kerosene, Tk 121 for petrol, and Tk 125 for octane

16m ago