দিনিপ্রো নদীর তীরে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল পুনর্দখল করেছে ইউক্রেন

ইউক্রেনের ৪ অঞ্চলকে সম্প্রতি নিজ দেশের অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে, পশ্চিমের গণমাধ্যম কিয়েভের বরাত দিয়ে জানাচ্ছে, তীব্র পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে একের পর এক রুশ অধিকৃত শহর ও গ্রাম পুনর্দখল করে নিচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা।
দনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের বাহিনীর সাঁজোয়া যান। ছবি: রয়টার্স
দনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের বাহিনীর সাঁজোয়া যান। ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের ৪ অঞ্চলকে সম্প্রতি নিজ দেশের অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে, পশ্চিমের গণমাধ্যম কিয়েভের বরাত দিয়ে জানাচ্ছে, তীব্র পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে একের পর এক রুশ অধিকৃত শহর ও গ্রাম পুনর্দখল করে নিচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা।

আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনের বাহিনী দেশটির দক্ষিণে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে দিনিপ্রো নদীর তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে।

দেশটির পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি এলাকা কিয়েভ ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় অপারেশনাল কমান্ড দাবি করেছে, তারা ৩১ রুশ ট্যাংক ও একটি রকেট লঞ্চার ধ্বংস করেছে।

যুদ্ধক্ষেত্রের এসব সংবাদ রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি।

গতকাল সোমবার সদ্য দখল করা লাইমান শহরে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করার জন্য ইউক্রেনীয় বাহিনীর বেশ কয়েকটি সামরিক পরিবহন সেখানে নিয়ে আসা হয়েছে। দনবাস অঞ্চলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য লাইমান গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্র।

রুশ ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি সেতু। ছবি: রয়টার্স
রুশ ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি সেতু। ছবি: রয়টার্স

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, 'বেশ কয়েকটি জনবসতিপূর্ণ এলাকা স্বাধীন হয়েছে। আরও বেশ কিছু ফ্রন্টে যুদ্ধ চলছে।'

লুহানস্কের গভর্নর সের্গেই গাইদাই গণমাধ্যমকে জানান, রুশ বাহিনী সোয়াতোভো শহরের একটি মানসিক হাসপাতাল দখল করেছে। লিসিচানস্ক ও সেভেরোদনেৎস্ক শহর পুনর্দখলের পথে এই স্থাপনাটি বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

সের্গেই বলেন, 'এই দালানে বেশ কয়েকটি ভূগর্ভস্থ কক্ষ আছে। তারা (রুশ বাহিনী) প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নিয়েছে।'

দিনিপ্রো নদীর পশ্চিম উপকূলের শহর দাদশেনি পুনর্দখল করেছে ইউক্রেন। দেশটির খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার নিযুক্ত নেতা ভ্লাদিমির সালদো এই তথ্য জানিয়েছেন।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভিডিওতে জানা গেছে, ইউক্রেনের ১২৮তম মাউন্টে অ্যাসল্ট ব্রিগেড দিনিপ্রো নদীর তীরের গ্রাম মিরোলিউবিভকায় দেশটির নীল-হলুদ পতাকা উড়িয়ে পুনর্দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

খারকিভের আংশিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দালান। ছবি: এপি
খারকিভের আংশিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দালান। ছবি: এপি

খেরসনের আঞ্চলিক কাউন্সিল সদস্য সের্গেই খালান আরও ৪ গ্রাম পুনর্দখলের কথা জানান।

'এর অর্থ হচ্ছে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী দিনিপ্রোর তীর ধরে শক্তিমত্তার সঙ্গে বেরিস্লাভের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।

দিনিপ্রোর পশ্চিম উপকূলে অবস্থানরত ২৫ হাজার রুশ সেনার উপকরণ ও সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেন। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের মূল সেতুগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। ফলে রুশরা নদী পার হওয়ার বিকল্প ব্যবস্থা অবলম্বন করতে বাধ্য হয়েছে।

কিয়েভের বাহিনী খুব শিগগির দিনিপ্রো নদীর তীরে অবস্থানরত রুশ বাহিনীকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কিয়েভভিত্তিক সামরিক বিশ্লেষক ওলেহ জিদানভ বলেন, 'আমরা ফ্রন্টলাইন ভেঙে এগিয়ে যাচ্ছি। রুশ বাহিনী ইতোমধ্যে আক্রমণের সক্ষমতা হারিয়েছে। আজ অথবা আগামীকাল তারা প্রতিরোধের সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলবে।'

রুশ গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার রাশিয়ার পশ্চিম সামরিক ডিসট্রিক্টের কমান্ডারকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সম্প্রতি আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ইজিয়ামের একটি স্কুল। ছবি: এপি
ইজিয়ামের একটি স্কুল। ছবি: এপি

পারমাণবিক আক্রমণের হুমকি, রিজার্ভ সেনা সমাবেশের ঘোষণা, ৪ অঞ্চলে গণভোট ও সেগুলোকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে দাবি করে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে অনেক দিন ধরেই তিনি জাতিকে বড় কোনো বিজয়ের খবর দিতে পারছেন না। মস্কোর পক্ষ থেকে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক জয়ের মোক্ষম জবাবও নেই।

সব মিলিয়ে বলা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আগ্রাসন শুরুর সময় যে অবস্থানে ছিল রাশিয়া, এখন সে তুলনায় বেশ নড়বড়ে অবস্থানে আছে দেশটি।

 

Comments

The Daily Star  | English

High Temperature Days: Barring miracle, record of 76yrs breaks today

At least 23 days of this month were heatwave days, which equals the record set in 2019 for the entire year.

12h ago