তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন এরদোয়ান

তুরস্কের নির্বাচনের ২ শীর্ষ প্রার্থী এরদোয়ান (বাঁয়ে) ও কিলিজদারগলু (ডানে)। ছবি: এএফপি
তুরস্কের নির্বাচনের ২ শীর্ষ প্রার্থী এরদোয়ান (বাঁয়ে) ও কিলিজদারগলু (ডানে)। ছবি: এএফপি

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনা প্রায় শেষের পথে। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জানা যাবে চূড়ান্ত ফল। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রিসেপ  তাইয়েপ এরদোয়ানকে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে আবারও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিজদারগলুর বিপক্ষে লড়তে হবে।

আজ সোমবার তুরস্কের সরকারি সংবাদমাধ্যম টিআরটি জানিয়েছে, ৯৯ দশমিক ০১ শতাংশ ভোটগণনা শেষ হয়েছে। সে অনুযায়ী, এরদোয়ান পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ ভোট। কামাল কিলিজদারগলু পেয়েছেন ৪৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোট। ৫ দশমিক ২১ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছেন সিনান ওগান।

রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, দেশের ভেতরের কিছু ভোটের পাশাপাশি প্রবাসী নাগরিকদের দেওয়া ভোটের ৩০ শতাংশ গণনা বাকি রয়েছে।

গতকাল রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। প্রায় সাড়ে ৫ কোটিরও বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন, যা দেশটির মোট ভোটারের ৮৭ দশমিক ৬৭ শতাংশের কাছাকাছি।

রাত সাড়ে ৯টার আগে কোনো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভোটের আংশিক ফল জানানোর ওপর বিধিনিষেধ দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এটাই গত কয়েক দশকের মধ্যে তুরস্কের সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন।

দ্বিতীয় দফা ভোট ও সিনান ওগানের গুরুত্ব

প্রচলিত আইন অনুযায়ী, ভোটের ফল চূড়ান্ত হওয়ার পর যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পান, তবে ২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

তুরস্কের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এরকম পরিস্থিতিতে আগামী ২৮ মে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন হবে এবং এতে শুধু ২ শীর্ষ প্রার্থী এরদোয়ান ও কিলিজদারগলু লড়বেন। সেক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে থাকা ন্যাশনালিস্ট প্রার্থী সিনান ওগান বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি শীর্ষ ২ প্রার্থীর যেকোনো একজনের পক্ষে আনুষ্ঠানিক সমর্থন জানাবেন। ওগান যাকে সমর্থন দেবেন, সেই অনুযায়ী তার দলের সমর্থকরাও যদি একই ব্যক্তিকে ভোট দেন, তাহলে সেই প্রার্থীই হতে পারবেন দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।

ন্যাশনালিস্ট নেতা সিনান ওগান। ছবি: ওগানের আনুষ্ঠানিক টুইটার পেজ থেকে সংগৃহীত
ন্যাশনালিস্ট নেতা সিনান ওগান। ছবি: ওগানের আনুষ্ঠানিক টুইটার পেজ থেকে সংগৃহীত

আজ সকালে এরদোয়ান আঙ্কারায় তার দল একে পার্টির সমর্থকদের জানান, প্রয়োজন হলে তিনি দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুত। দ্বিতীয় দফায় জয়লাভের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকার কথাও তিনি সমর্থকদের জানান।

কিলিজদারগলু দ্বিতীয় দফা ভোটে জয়লাভ করার অঙ্গীকার জানিয়ে বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী জনগণের আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কিলিজদারগলুর অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দল বারবার আপত্তি জানিয়ে ভোটগণনাকে বিঘ্নিত করেছে। টেলিভিশনে প্রচারিত বক্তব্যে তিনি বলেন 'জাতি দ্বিতীয় দফা ভোট চাইলে আমরা একে স্বাগত জানাই।'

আগামী ২ সপ্তাহে যা হতে পারে

বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনে সরাসরি ফল না এলে ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপে জর্জরিত ৮ কোটি ৫০ লাখ মানুষের দেশটি আরও অনিশ্চয়তার দিকে এগোবে। একইসঙ্গে পুঁজিবাজার ও বৈদেশিক মুদ্রার বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজান আকবাস রয়টার্সকে বলেন, 'আগামী ২ সপ্তাহ সম্ভবত তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ হবে এবং এ সময়ে অনেক কিছুই ঘটবে। আমি আশঙ্কা করছি, ইস্তাম্বুলের পুঁজিবাজারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ধস নামবে এবং মুদ্রাবাজারে বৃহৎ অস্থিরতা দেখা দেবে।'

'এরদোয়ানের জোট বিপক্ষ জোটের চেয়ে নির্বাচনে অনেক ভালো করেছে। সেই কারণে এরদোয়ান দ্বিতীয় দফা ভোটে বিশেষ সুবিধা পাবেন', যোগ করেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন পার্লামেন্টের ৬০০ আসনেরও ভোটগ্রহণ হয়েছে। সেই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছে এরদোয়ানের দল একে পার্টির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট পিপলস অ্যালায়েন্স।

৯৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভোটগণনা শেষে দেখা গেছে, পিপলস অ্যালায়েন্স পেয়েছে ৩২১টি আসন। এর মধ্যে এরদোয়ানের একে পার্টি একাই জয়ী হয়েছে ২৬৬টি আসনে। ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স জয়ী হয়েছে ২১৩ আসনে। আর অন্যান্য দল ৬৬ আসনে জয়ী হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago