জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম করপোরেট শাখার সব টাকা এস আলমের পকেটে

জনতার সাধারণ বীমা ভবন চট্টগ্রাম কর্পোরেট শাখা থেকে এস আলম গ্রুপকে আট হাজার ২১৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।
এস আলম গ্রুপ

রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের এক শাখার ঋণের ৯০ শতাংশই এস আলম গ্রুপের পকেটে। চট্টগ্রামভিত্তিক এই শীর্ষ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দেশের ব্যাংকিং খাতে কীভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে এটি আরেক উদাহরণ।

জনতার সাধারণ বীমা ভবন চট্টগ্রাম করপোরেট শাখা থেকে এস আলম গ্রুপকে আট হাজার ২১৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, সেই শাখার একক ঋণগ্রহীতার হিসাবে এটি ১৬৭ শতাংশ বেশি।

জনতা ব্যাংকের কাছ থেকে আরও দুই হাজার ২৩৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা নেওয়ায় মোট ঋণ ১০ হাজার ৪৪৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এটি ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের ৪৫১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

আইন অনুসারে, কোনো ব্যাংক পরিশোধিত মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে পারে না। গত জুনের শেষে জনতার পরিশোধিত মূলধন ছিল দুই হাজার ৩১৪ কোটি টাকা।

আট ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান এস আলমের ঋণ জুন শেষে জনতা ব্যাংকের মোট ৯৮ হাজার কোটি টাকা ঋণের ১০ দশমিক সাত শতাংশ।

ব্যাংকটির ঋণের প্রায় ৪৯ শতাংশ খেলাপি। এটি ব্যাংকটিকে আর্থিকভাবে চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত ২৫ জুন এস আলম গ্রুপের ছয় প্রতিষ্ঠানের নেওয়া এক হাজার ৮৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ম না মেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ অনুমতিতে চার বছরের জন্য পুনঃতফসিল করেছে ব্যাংকটি।

এর মধ্যে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ এক হাজার ৩৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি এক হাজার ১৮৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল ৬৯৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন ২২১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস এক হাজার ২২৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা নিয়েছে।

এস আলম গ্রুপের আট হাজার ৮৯৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা বকেয়া থাকলেও প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনঃতফসিল সুবিধা দেওয়া হয়।

ব্যাংকিং নিয়ম অনুসারে, কোনো গ্রাহকের ঋণ অনুমোদিত পরিমাণের মধ্যে থাকলেই নতুন করে ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।

এস আলম গ্রুপের ক্ষেত্রে তা হয়নি। এর পুনঃতফসিল করা ঋণ তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকা সীমা ছাড়িয়ে চার হাজার ৩৭২ কোটি ২৮ লাখ টাকা হয়েছে।

তারপরও গত ২৮ জুলাই ঋণ পুনঃতফসিলের অনাপত্তিপত্র দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তবে অনাপত্তিপত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শর্ত দিয়েছে। এর মধ্যে আছে ঋণের পরিমাণ আর বাড়ানো যাবে না এবং ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ঋণের পরিমাণ অনুমোদিত পরিমাণের মধ্যে আনতে হবে।

এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আব্দুল জাব্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

S Alam sons: They used fake pay orders even to legalise black money

Ashraful Alam and Asadul Alam Mahir, two sons of controversial businessman Mohammed Saiful Alam, deprived the state of Tk 75 crore in taxes by legalising Tk 500 crore in undisclosed income, documents obtained by The Daily Star have revealed.

5h ago